বার্নপুর সেল আইএসপি বা ইস্কো কারখানা কর্তৃপক্ষ পরিচালিত বার্নপুর বালক প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় এবং বার্নপুর বালিকা প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়কে বেসরকারি হাতে হস্তান্তর বা বেসরকারিকরণের জন্য দরপত্র বা টেন্ডার ডাকা হয়েছে।
স্বাভাবিক ভাবেই কারখানা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে, ওই স্কুলগুলোর পড়ুয়া থেকে তাদের অভিভাবকরা তীব্র ক্ষুব্ধ। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আসানসোল পুরনিগমের ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর এবং রাজ্য শিক্ষক নেতা অশোক রুদ্র। দিন দুই আগে, তিনি একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে সেল আইএসপি কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সেইমতো সোমবার অশোক রুদ্রের নেতৃত্বে আসানসোল পুরনিগমের দুই বোরো চেয়ারম্যান এবং তৃণমূল কাউন্সিলর সহ বিপুল সংখ্যায় স্থানীয় মহিলা ও পুরুষ বার্নপুর টানেল গেট থেকে মিছিল করে আইএসপির ডিআইসির কার্যালয়ে পৌঁছান। প্ল্যাকার্ড হাতে তারা স্কুলগুলির বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ করেন। এরপর কাউন্সিলর অশোক রুদ্রের নেতৃত্বে কাউন্সিলরদের একটি প্রতিনিধিদল আইএসপির সিজিএম (এইচআর) ইনচার্জ ইউপি সিংর কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। যাতে স্কুলগুলিকে বেসরকারি হাতে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। তারা এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া হলে টানা আন্দোলন বিক্ষোভেরও হুঁশিয়ারি দেন।
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর কাউন্সিলর অশোক রুদ্র বলেন , সেলের আইএসপি কতৃপক্ষ বার্নপুর বালক প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়, বার্নপুর বালিকা প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় এবং আইএসপি মডেল ইংরেজি বিদ্যালয় পরিচালনা করে। এর আগে, কয়েক বছর আগে ছোটাদিঘারি স্কুলটি বন্ধ করে একটি কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। আইএসপি কর্মীদের সাথে এই এলাকার দরিদ্র পরিবারের বিপুল সংখ্যায় শিশুরা বার্নপুর বালক ও বালিকা প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। কিন্তু আইএসপি কর্তৃপক্ষ শিক্ষাবিরোধী এবং বাঙালি বিরোধী আচরণ করে এই স্কুলগুলিকে বেসরকারিকরণ করতে চায়। এটি কোনও অবস্থাতেই হতে দেওয়া হবে না।
তিনি সেলের সমালোচনা করে বলেন যে, আইএসপির আধুনিকীকরণের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা এই সমস্ত স্কুলের উন্নতি করতে পারতো। সব পরিকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, কেন সেল আইএসপি কতৃপক্ষ এই স্কুলগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চায়? তাছাড়া, সেল আইএসপির সিএসআর বিভাগ অন্যান্য স্কুলের উন্নয়ন এবং শিশুদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে।
অন্যদিকে, সেল আইএসপি কেনও নিজস্ব স্কুল বন্ধ করতে চায়? এই স্কুলগুলির বেসরকারিকরণের পরে, সেখানে পড়াশোনা করা শিশুদের কাছ থেকে যথেচ্ছ ফি নেওয়া হবে। এর জন্য কর্তৃপক্ষের জবাব দেওয়া উচিত। সেল আইএসপি কর্তৃপক্ষের উচিত এই স্কুলগুলির শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা বন্ধ করা। তিনি আরো বলেন, এই কেন্দ্রীয় সংস্থার কেবল উৎপাদনের দিকে নয়, এখানে বসবাসকারী মানুষ এবং তাদের পরিবারের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত।
এদিন সবমিলিয়ে আসানসোল পুরনিগমের ৮ জন কাউন্সিলার উপস্থিত ছিলেন।










