‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ ঘিরে চলা বিতর্কে অবশেষে মুখ খুলল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জানান, মোবাইলে এই সরকারি অ্যাপ ইনস্টল করা বাধ্যতামূলক নয়। চাইলে ব্যবহারকারীরা এটি ডিলিটও করতে পারবেন। মঙ্গলবার সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে এই স্পষ্ট বার্তা দেন তিনি। বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মাঝে কেন্দ্রের এই ব্যাখ্যা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
সম্প্রতি কেন্দ্র মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে জানায়, নতুন মোবাইলে প্রি-লোডেড থাকবে সঞ্চার সাথী অ্যাপ। এর পরই বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, সাইবার নিরাপত্তার অজুহাতে কি সরকার নাগরিকদের গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করতে চাইছে? পেগাসাস বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা অভিযোগ তোলে যে এটি নজরদারির নতুন কৌশল।
কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরম মন্তব্য করেন, এটি যেন ‘পেগাসাস প্লাস প্লাস’। কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপালের অভিযোগ, প্রি-লোডেড সরকারি অ্যাপ নাগরিকদের গোপনীয়তার ওপর আঘাত। তৃণমূল নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, সরকার ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপের নতুন ফাঁদ পেতেছে। প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও সংসদ চত্বরে বলেন, এটি “স্নুপিং অ্যাপ”, নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করা যাবে না।
এই বিতর্কের মাঝেই কেন্দ্রের ব্যাখ্যা—সঞ্চার সাথী সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। সিন্ধিয়া জানান, “আপনি চাইলে অ্যাক্টিভেট করুন, না চাইলে না। প্রয়োজনে ডিলিট করে দিন। এটি কেবল ক্রেতা সুরক্ষার জন্য।” তাঁর দাবি, অ্যাপটির সঙ্গে নজরদারি, কল মনিটরিং বা ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের কোনও সম্পর্ক নেই। শুধুই সাইবার প্রতারণা রুখতেই এই উদ্যোগ।
বিরোধীদের অভিযোগকে সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, বিরোধীরা অযথা বিতর্ক তৈরি করছে। বিজেপি সাংসদ শশাঙ্কমণি ত্রিপাঠীর দাবি, অ্যাপটি মানুষের নিরাপত্তা বাড়াবে, ডেটা কোথাও ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা নেই।
এদিন সংসদে সঞ্চার সাথী নিয়ে আলোচনা চেয়ে কংগ্রেস মুলতুবি প্রস্তাব দেয়। পাশাপাশি এসআইআর নিয়েও হট্টগোল হয়। তুমুল অশান্তির জেরে লোকসভা ও রাজ্যসভায় অধিবেশন দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়।










