ভারতে প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালিত হয় মহান শিক্ষক, দার্শনিক ও রাষ্ট্রনায়ক ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে। তিনি ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি।
একজন খ্যাতনামা পণ্ডিত ও শিক্ষাবিদ হিসেবে রাধাকৃষ্ণন বিশ্বাস করতেন শিক্ষা ও শিক্ষকের গুরুত্ব অপরিসীম। তাঁর ছাত্ররা যখন জন্মদিন উদযাপন করতে চেয়েছিলেন, তখন তিনি বিনম্রভাবে প্রস্তাব দেন যে, তাঁর জন্মদিনকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হোক। সেই থেকেই ১৯৬২ সাল থেকে গোটা দেশে শিক্ষক দিবস পালনের ঐতিহ্য শুরু হয়।
ড. এস রাধাকৃষ্ণন সম্পর্কে কিছু তথ্য
- জন্ম: ৫ সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮, তিরুতানি (তামিলনাড়ু)
- দর্শনশাস্ত্রে পড়াশোনা: ক্রিশ্চিয়ান কলেজ, মাদ্রাজ
- কর্মজীবন: শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।
- উপাচার্য পদে দায়িত্ব: অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়।
- মৃত্য: ১৭ এপ্রিল, ১৯৭৫
রাধাকৃষ্ণন কতগুলি ভাষা জানতেন?
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন ছিলেন একাধিক ভাষায় পারদর্শী। তিনি তেলুগু, তামিল, সংস্কৃত ও ইংরেজি ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে ও লিখতে পারতেন। তাঁর বহু-ভাষাজ্ঞান তাঁর দক্ষিণ ভারতীয় সাংস্কৃতিক পটভূমি এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষাজীবনের প্রতিফলন।
ভাষার তালিকা:
- তেলুগু: তাঁর মাতৃভাষা, কারণ তিনি তেলুগুভাষী পরিবারে জন্মেছিলেন।
- তামিল: শৈশব ও যৌবনের বড় অংশ কাটিয়েছেন তামিলনাড়ুতে, ফলে তামিল ভাষায়ও দক্ষ ছিলেন।
- সংস্কৃত: প্রেসিডেন্সি কলেজ, মাদ্রাজে পড়াশোনার সময় সংস্কৃত শিখেছিলেন। তিনি মনে করতেন ভারতীয় সংস্কৃতি বোঝার জন্য সংস্কৃত অধ্যয়ন অপরিহার্য।
- ইংরেজি: তাঁর বহু গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক রচনা ও বক্তৃতা ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছিল। এমনকি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানেও তিনি ইংরেজিতে পাঠদান করেছিলেন।
ড. রাধাকৃষ্ণনের ভাষাজ্ঞান এবং ভারতীয় ও পাশ্চাত্য দর্শনের গভীর জ্ঞান তাঁকে এক সেতুবন্ধনকারী চিন্তাবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, যিনি ভারতীয় দর্শনকে বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেন।