শুক্রবার লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভারতের সাহসী সেনারা এমনভাবে শত্রুপক্ষকে শাস্তি দিয়েছে, যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি।
পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) এবং পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ধ্বংসের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, ৭ ও ৮ মে-র মধ্যরাতে শুরু হওয়া এই অভিযানে তিন বাহিনী একযোগে অংশ নেয়। ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত চলা এই আক্রমণ ছিল ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিশোধ। ওই সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারান, যাঁদের অধিকাংশই পর্যটক।
মোদী বলেন, “আমি আমাদের সাহসী সেনাদের স্যালুট জানাই, যারা অপারেশন সিঁদুর পরিচালনা করেছে। আমাদের সাহসী সৈন্যরা এমনভাবে শত্রুদের শাস্তি দিয়েছে, যা তাদের কল্পনার বাইরে ছিল। সন্ত্রাসবাদীরা রক্তপাত ঘটিয়েছিল, তাই আমরা শত্রুদের শাস্তি দিয়েছি। পহেলগাঁও ঘটনার পর ভারত ক্ষুব্ধ হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, পহেলগাঁও হামলায় সন্তানদের সামনে বাবাকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর সশস্ত্র বাহিনীকে স্বাধীনভাবে লক্ষ্য বেছে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় এবং তারা পাকিস্তানে সন্ত্রাস ঘাঁটি ধ্বংস করে যথাযথ জবাব দিয়েছে।
পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে তিনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেন, “পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল অনেকদিন ধরে চলছে, কিন্তু এখন আর তা সহ্য করা হবে না। শত্রুরা যদি এই চেষ্টা চালিয়ে যায়, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী নিজেদের শর্তে, নিজেদের সময় বেছে, লক্ষ্য পূর্ণ করে জবাব দেবে। আমরা প্রস্তুত আছি।”
অর্থনীতির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দীপাবলির আগে দেশের জন্য বড় ঘোষণাও করেন। তিনি জানান, আগামী দিনে ‘জিএসটি সংস্কারের’ নতুন ধাপ চালু হবে, যা দেশের সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, শিল্প এবং ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগ (MSME)-দের জন্য করভার কমাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই দীপাবলিতে আমি আপনাদের দ্বিগুণ আনন্দ দেব। গত আট বছরে আমরা বড় ধরনের জিএসটি সংস্কার করেছি, আর এখন আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার আনছি। এর ফলে সারা দেশে করভার কমবে”।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কৃষক ও মৎস্যজীবীদের স্বার্থ রক্ষায় তিনি কোনও আপস করবেন না। তাঁর কথায়, “কৃষক, পশুপালক ও মৎস্যজীবীরা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তাঁদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনও নীতি হলে আমি দেওয়াল হয়ে দাঁড়াব। বিশ্ববাজারে ভারতের ভাবমূর্তি উন্নত করতে আমাদের মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনে জোর দিতে হবে” ।