জলপাইগুড়ি: সময়টা নেহাত কম নয়। দুই শতাধিক বছরে বদলেছে পরিবেশ, বদলেছেন পুরোহিতও। শহর লাগোয়া গোশালা মোড়ে বট, পাকুড় ঘেরা এক টুকরো তপোবনের মাঝে রয়েছে ইতিহাস বিজড়িত দেবী চৌধুরাণীর কালীমন্দির। আজ রীতি মেনে পুজো হবে এই মন্দিরেও৷ প্রতিবারই দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর ভক্ত আসেন এখানে।
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের দেবী চৌধুরাণী উপন্যাসে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রের নানা আখ্যান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শহর ও লাগোয়া এলাকায়৷ ১৭৯২ সালে জঙ্গলে ঘেরা এই এলাকায় এক রাতের পুজো করতেন স্থানীয়েরা। এই জায়গাকেই সে সময় ডেরা হিসেবে বেছে নেন দেবী চৌধুরাণী। শক্তির সাধনা করেন তিনি। কথিত রয়েছে, এই মন্দিরে পুজো করেছেন ভবানী পাঠকও।
বর্তমান বাংলাদেশের রংপুর, দিনাজপুর আর জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর ছিল দেবী চৌধুরাণীর খাস এলাকা। ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা এই নারী জলপাইগুড়ির এই মন্দির সহ বিভিন্ন এলাকায় দরবার বসিয়ে গরিবদের পাশে থাকতেন৷ বর্তমানে এই মন্দিরের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে চার লেনের মহাসড়ক। পাশেই রুকরুকা আর করলা নদী। মারোয়ারি সম্প্রদায়ের শ্মশানও পাশেই। কিছুটা এগোলেই তিস্তা। সে সময় এই জায়গা ছিল হিংস্র নানা জন্তুতে পরিপূর্ণ। নিজের ও দলের সবার নিরাপত্তার কথা ভেবেই এখানে ঘাঁটি তৈরি করেন দেবী চৌধুরাণী৷

মন্ত্রসিদ্ধ মতে আজও পুজো হয় এই মন্দিরে। কালী মন্দিরের সম্পাদক দেবাশিস সরকার ও পুরোহিত সুভাষ চৌধুরী জানান, মায়ের ভোগে থাকে শাল, বোয়াল-সহ আমিষ পদ। আগের নিয়ম মেনেই পুজো হয়। প্রচুর ভক্ত আসেন পুজোর ক’দিন।










