আসানসোল : বছরের পর বছর ধরে আসানসোলের লক্ষ লক্ষ মানুষের শহরের যানজটে পড়ে নাজেহাল অবস্থা। তারা রাস্তাঘাটের এই সমস্যার সমাধান দূর করার জন্য ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
প্রসঙ্গত, কলকাতার পর রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হিসেবে আসানসোল পরিচিত। আসানসোল পুরনিগম এলাকায় ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস করেন। কিন্তু শহরের যে দুটি রাস্তায় যানজট হয়, তার মধ্যে প্রধান ও অন্যতম হল জিটি রোড এবং এসবি গরাই রোড। কিন্তু গত কয়েক বছরে এইসব রাস্তায় যানবাহন এবং জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে, এই রাস্তাগুলিতে চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে টোটো শহরে গত কয়েক বছরে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়ে গেছে।
সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়িক এবং সামাজিক সংগঠনও বিভিন্ন পয়েন্টে ফ্লাইওভার তৈরির দাবি জানিয়েছে। শেষ পর্যন্ত অনেকটা চাপে পড়ে রাজ্য সরকার এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে কথা বলতে দিন দুই আগে কলকাতা থেকে কেএমডিএর একটি দল আসানসোলে আসেন। তারা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের সাথেও এই বিষয়ে একটি বৈঠকও করেছেন। সেখানে আলোচনা করাও হয়েছে।
সরকারি সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, শতাব্দী পার্ক থেকে উষাগ্রাম ছাতাপাথর পর্যন্ত জিটি রোডে, সেনরেল রোড বা বিবেকানন্দ সরণির কল্যাণপুর হাউজিং মোড় থেকে বার্নপুর মোড় পর্যন্ত, এসবি গরাই রোড কোর্ট বাজার রেলওয়ে ক্রসিং এবং আসানসোল শহরের জিটি রোডের বিএনআরে আরও একটি সেতু ও ফ্লাইওভার নির্মাণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর মধ্যে, শহরের জিটি রোডে প্রস্তাবিত ফ্লাইওভার ছাড়া, বাকি তিনটিতে রেলের সহযোগিতা প্রয়োজন হবে।
অন্যদিকে, রেল ইতিমধ্যেই এসবি গরাই রোডের কোর্ট বাজার রেল ক্রসিংয়ে ফ্লাইওভার সম্পর্কিত সমীক্ষা ও অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানা গেছে। অর্থাৎ, রাজ্য সরকারকে প্রস্তাবিত চারটির মধ্যে তিনটিতে বিশেষ জোর দিতে হবে। এর আগে, পিডব্লিউডি বা পূর্ত দপ্তর শতাব্দী পার্ক থেকে পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম মোড় পর্যন্ত ফ্লাইওভার তৈরির সমীক্ষা করেছিল। পরে তা নিয়ে একটি ডিপিআর তৈরি করেছিল তারা । কিন্তু পরে তা ঠান্ডা ঘরে চলে যায়।
এখন আবার বিধান সভা নির্বাচনের আগে, শহরে ফ্লাইওভারটি নিয়ে তোড়জোড় শুরু হলো। যদি এইসব ফ্লাইওভার তৈরি হয়, তাহলে শহরের লক্ষ লক্ষ মানুষের বছরের পুরনো দাবি পূরণ শুধু হবে না, বরং রাস্তা এবং যানজটের সমস্যা থেকেও অনেকটাই মুক্তি মিলবে।
এই বিষয়ে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, রাজ্য সরকার এ বিষয়টি গুরুতর সহকারে দেখছে। তবে, সবকিছু এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এফএএসবিসিসিআই সভাপতি শচীন রায় বলেন, আমরা বছরের পর বছর ধরে এই দাবি করে আসছি। যদি এমন কিছু হয়, তবে তা খুবই আনন্দের বিষয় । শহর বাঁচবে।
এসবিএফসিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক জগদীশ বাগড়ি বলেন, প্রস্তাবিত এইসব ফ্লাইওভারটি শহরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হোক।