অভিষেক সেনগুপ্ত, জলপাইগুড়ি: আগে লক্ষ্মীপুজোর দিন কয়েক পর থেকেই শুরু হত প্রস্তুতি। সে সময়ের কচিকাঁচাদের কেউ ইট, মাটি, কেউবা কঞ্চি, কাপড় দিয়ে শ্যামাপুজোর আগেই বানাতো পাহাড়। ছোট পুকুর, বা নদীও কাটা হত পাহাড়ের পাদদেশে। সেই পাহাড়, নদীর সেতুতে থাকত ছোট আকারের নানা খেলনা গাড়ি। নদীতে চলত টিনের স্টিমার। এখন শহরে সে চল প্রায় উঠেই গিয়েছে। শহর ও লাগোয়া দু’-এক জায়গায় কালীপুজোয় পাহাড় বানায় কেউ কেউ। ছোটদের তৈরি পাহাড়ের জন্য নানা খেলনা, সামগ্রী আনলেও, বিক্রি আগের মতো নেই বলেই জানালেন শহরের একাংশ বিক্রেতা।
এক-দেড় দশক আগেও কালীপুজোর আগে পাহাড় বানানোয় ছোটদের উৎসাহ ছিল দেখার মতো। কার তৈরি পাহাড় কতটা সুন্দর তা নিয়ে রীতিমতো প্রচ্ছন্ন প্রতিযোগিতাও চলত পাড়ার খুদেদের মধ্যে। পাহাড় বানানোর কাজে সহায়তা করতে দেখা যেত বাড়ির বড়দেরও। নানা ধরনের গাছ, ইঁটের গুঁড়োর রাস্তা, কাঠের টুকরো, পেরেক, সুতো দিয়ে তৈরি ব্রিজও থাকতে সেই পাহাড়-ঘেঁষা ছোট নদীতে। খেলনা গাড়ি, পুতুল-সহ নানা সামগ্রী দোকান থেকে কিনে নিয়ে সেই পাহাড় সাজাত কচিকাঁচারা। সে সময় ওই সব দোকান গুলিতে পাহাড় সাজানোর উপকরণ কেনার জন্য ভিড় করতেন ক্রেতারা। দিন বদলেছে। সময় কমেছে। ক্রমশ ব্রাত্য হয়ে যাচ্ছে পাহাড় বানানোর চল। তবে শহর ও লাগোয়া কয়েকটি এলাকায় একক বা সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে পাহাড় তৈরি করেন কয়েকজন। ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে বিগত ৬ বছর ধরে পাহাড় তৈরির প্রতিযোগিতারও আয়োজন করেছেন শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কংগ্রেস কমিটি বলে জানান স্থানীয় নেতা মৃদুল দেব।
এ বারেও পাহাড় সাজানোর খেলনা-সহ নানা সামগ্রী এনেছেন দোকানিরা। তবে, বিক্রি তেমন নেই বলেই জানান একাংশ ব্যবসায়ী। দিনবাজারের ব্যবসায়ী মায়াঙ্ক আগরওয়াল, রামাকান্ত শা-রা জানান, “নানা খেলনা এনেছি। বিক্রি যে একেবারেই হচ্ছে না তা নয়, তবে তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম। এখন শহর ও লাগোয়া এলাকায় পাহাড় তৈরির প্রবণতা কমায় ব্যবসায় কিছুটা ঘাটতি হয়েছে।”










