নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: পাঠক বাড়াতে হাতিয়ার মুঠোফোন। নিজের মোবাইল ফোনে সবার যোগাযোগ করে সদর পঞ্চায়েত সমিতির লাইব্রেরির পাঠক হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন নবনিযুক্ত গ্রন্থাগারিক শবনম মুস্তাফি। এক সময়ে এক সময়ে পাঠকের ভিড়ে গমগম করত এই গ্রন্থাগার। পরে পাঠক সংখ্যা দাঁড়ায় শ’খানেক মাত্র। দায়িত্ব পেয়েই সদর পঞ্চায়েত সমিতির গ্রন্থাগারের পাঠক সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তার এই উদ্যোগে স্বাগত জানিয়েছেন সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও।
শহরের বেশির ভাগ লাইব্রেরিই পাঠকের অভাবে ধুঁকছে। একটা সময় শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকার অন্য লাইব্রেরির মতো সদর পঞ্চায়েত সমিতির লাইব্রেরিরও সুদিন ছিল। আগে, এলাকার বাসিন্দারা বই পড়তে আসতেন সদর পঞ্চায়েত সমিতির গ্রন্থাগারে। অনেকে নিয়ম মেনে সই-সাবুদ করে বই বাড়িও নিয়ে যেতেন। পড়া শেষ হলে ফের সে বই ফেরত আসত। মোবাইল-ইন্টারনেটের যুগে প্রায় ব্রাত্য হয়ে গিয়েছে বই পড়ার অভ্যাস। সে কারণেই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাঠক সংখ্যাও কমেছে। কমবেশি এক দশক পরে স্থায়ী গ্রন্থাগারিক এসেছেন এখানে। যোগদানের পরে মাস তিনেক ধরে চেনা-অচেনা অনেককেই নিজের ফোন থেকে ‘কল’ করে গ্রন্থাগারের সদস্য হওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন শবনম। আবার বাড়ি যাতায়াতের পথেও চেনাজানাদের আবেদন জানাচ্ছেন আদপে শহর সংলগ্ন বজরাপাড়ার বাসিন্দা ওই গ্রন্থাগারিক। এতে কাজও হয়েছে।
এখন গ্রন্থাগারের সদস্য সংখ্য ২৭০ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি৷ এরমধ্যে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়ারাও রয়েছে বলে জানান শবনম। এর পাশাপাশি, অনেকদিন গ্রন্থাগারে না আসা পুরানো সদস্যদেরও ফোন করছেন তিনি। গল্পের বইয়ের পাশাপাশি পড়াশোনা ও প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষার বইও গত বইমেলা থেকে এনেছেন শবনম। এই গ্রন্থাগারের পাশাপাশি শহরের উকিল পাড়ার মহিলা গ্রন্থাগারের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন শবনম। সেখানেও সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চেষ্টার কসুর করছেন না তিনি। বর্তমানে ওখানে সদস্য সংখ্যা বেড়ে দেড় শতাধিক হয়েছে বলে দাবি।
শবনম বলেন, “ফোন নম্বর জোগাড় করে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। পঞ্চায়েত সমিতির গ্রন্থাগারে পড়ুয়াদের অনেকেই সদস্যপদ নিয়েছে। ওদের চাহিদা বুঝে বই আনবো। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক কেন্দ্রিক বইয়ের পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বইও কিছু রয়েছে। আর, মহিলা গ্রন্থাগার নিয়েও আলাদা পরিকল্পনা নিয়েছি।” জেলা গ্রন্থাগারের সামাজিক মাধ্যমের পেজেও অনেক তথ্য রয়েছে বলে দাবি শবনমের।
সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনয় কুমার রায় বলেন, “উনি ভাল উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরাও পরামর্শ দিচ্ছি। নতুন প্রজন্মের পাঠকরা আসছে। এটা ভাল দিক।”