বাংলা থেকে নিম্নচাপ সরে গিয়ে বিহারে প্রবেশ করায় দামোদর উপত্যকায় বৃষ্টিপাত কিছুটা কমেছে। শনিবার সন্ধে ৬টা থেকে রবিবার সন্ধে ৬টা পর্যন্ত এলাকায় গড়ে ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে অবশেষে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়েছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)।
শনিবার সকাল থেকে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে যথাক্রমে ৩২,৫০০ ও ৩৭,৫০০ কিউসেক হারে জল ছাড়ছিল ডিভিসি। রবিবার রাত ৮টা থেকে সেই পরিমাণ কমিয়ে যথাক্রমে ২৭,৫০০ ও ৩৬,৫০০ কিউসেক করা হয়। অর্থাৎ এক ধাক্কায় প্রায় ৬ হাজার কিউসেক কমিয়ে এখন মোট ৬৪ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ছে দুই জলাধার থেকে। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট বাঁধ থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ কমানো হয়েছে— সকাল পর্যন্ত ১৪,১০০ কিউসেক হারে জল ছাড়লেও বিকেলে তা নামিয়ে আনা হয় ৫,০০০ কিউসেকে।
ডিভিসি–র নিয়ন্ত্রক সংস্থা দামোদর ভ্যালি রিজার্ভয়ার রেগুলেশন কমিটির (ডিভিআরআরসি) সদস্য–সচিব সঞ্জীব কুমার জানিয়েছেন, “আবহাওয়া দফতর প্রথমে জানিয়েছিল ১০ অক্টোবরের মধ্যে বর্ষা বিদায় নেবে। কিন্তু এখন বলা হয়েছে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত চলতে পারে। সেই কথা মাথায় রেখে আগামী সাত দিনে মাইথন ও পাঞ্চেতে অন্তত পাঁচ ফুট জলস্তর নামাতে হবে।”
রবিবার সারাদিন দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকেও ৭১,৭২৫ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। তবে সন্ধ্যা ৭টা থেকে তা কমিয়ে ৬৯,৭৫০ কিউসেক করা হয়। রাজ্য সেচ দফতরের দুর্গাপুর শাখার (দামোদর হেড ওয়ার্কস) নির্বাহী প্রকৌশলী সঞ্জয় মজুমদার বলেন, “বৃষ্টি কমলেও ডিভিসি জল ছাড়ছে, তাই ব্যারাজ থেকেও জল ছাড়তে হচ্ছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।”
রবিবার সকালে দুর্গাপুর ব্যারাজ পরিদর্শনে যান রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি বলেন, “ডিভিসি গঠিত হয়েছিল বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের স্বার্থে। কিন্তু এখন উল্টে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করছে ডিভিসি। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির জল বাংলায় এসে বন্যা তৈরি করছে, অথচ কর্তৃপক্ষ দায় এড়িয়ে যাচ্ছে।”