বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জলপাইগুড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। সঙ্গে জলপাইগুড়ি পুরসভার উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায় ও জেলা পরিষদের মেন্টর চন্দন ভৌমিক।- নিজস্ব ছবি
জলপাইগুড়ি: সোমবার পাহাড়ে আটকে থাকা পর্যটকদের জন্য শিলিগুড়িতে খোলা হবে পৃথক হেল্প ডেস্ক। দুধিয়ায় বন্যার জলের তোড়ে ভেঙে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ সেতুর জায়গায় বিকল্প সেতু তৈরি করবে পূর্ত দফতর। অনেক জায়গায় সড়কপথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। মৃত্যুর তথ্য এখনও না আসলেও কয়েক হাজার মানুষ বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রবিবার সন্ধ্যায় বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন সেরে জলপাইগুড়ি শহরের সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানালেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব।
এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে তার সঙ্গে ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের মেন্টর চন্দন ভৌমিক ও পুরসভার উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়। মেয়র বলেন, “কার্নিভাল সেরেই প্রশাসনকে দুর্যোগ মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছে। ভাল কাজ করছে জেলা প্রশাসন। বেশ কিছু ত্রাণ শিবির চালু রয়েছে।”
শিলিগুড়ি পুর নিগমের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড (জলপাইগুড়ির অংশ), ফুলবাড়ি, ময়নাগুড়ির রামশাই জিপি, সদর ব্লকের খড়িয়া জিপির একাংশ পরিদর্শন করেন মেয়র। ছিলেন প্রশাসনের কর্তারাও। গৌতম দেব বলেন, “উত্তরবঙ্গ প্রকৃতি নির্ভর। ভুটান ও সিকিম থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়া হলে এখানে বিপর্যয় নেমে আসে। কেন্দ্রীয় সরকার হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে।”
আটকে থাকা পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা শুরু হয়েছে৷ পৃথক হেল্প ডেস্কও খোলা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন খড়িয়া জিপির বিবেকানন্দ পল্লিতে তিস্তাবাঁধে তিনটি ফাঁটল দেখা যায়। খবর পেয়ে পুরসভার উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পরিস্থিতি সামাল দেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা। পরে সেচ দফতরের আধিকারিকেরাও ঘটনাস্থলে আসেন। সৈকত বলেন, “পুর এলাকার ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরসভার তরফে ফ্লাড শেল্টার ও কিচেন পরিষেবার মাধ্যমে ৩৫০০ জনকে সহায়তা করা হচ্ছে।”
এ দিকে জলের তোড়ে গরুমারার জঙ্গল থেকে গণ্ডার-সহ বন্যপ্রাণী ভেসে যাওয়ার খবর মিলেছে। গৌতম দেব বলেন, “১৫-২০ বছরে এত বড় বিপর্যয় ঘটেনি। বন দফতরের আধিকারিকেরা পরিস্থিতির ওপরে নজর রাখছেন। প্রশাসনের তরফেও সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষা করা হচ্ছে।”

এ দিকে শহর লাগোয়া দক্ষিণ সুকান্ত নগর এলাকায় তিস্তার জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিন শতাধিক পরিবার। ত্রিপলের সঙ্কটের কারণে অনেকে বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন পঞ্চায়েত সদস্য মহাদেব রায়। ওই এলাকায় শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ করেন কংগ্রেসের যুব শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ-সহ অন্যরা। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সদর ব্লক-১ এর সভাপতি শুভঙ্কর মিশ্রের নেতৃত্ব ত্রিপল বিতরণ করা হয় রাতে৷ বাঁধের উপরে খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।