Home / খবর / জেলায় জেলায় / ৫৭ বছর পরেও সেই স্মৃতি দগদগে, জলপাইগুড়িতে বন্যায় মৃতদের উদ্দেশে স্মৃতিতর্পণ

৫৭ বছর পরেও সেই স্মৃতি দগদগে, জলপাইগুড়িতে বন্যায় মৃতদের উদ্দেশে স্মৃতিতর্পণ

জলপাইগুড়ি: ৫৭ বছর আগের সেই দিনের মতো আজও মেঘলা আকাশ। দু-এক পশলা বৃষ্টিও হল। কার্নিভাল নিয়ে শনিবার সকাল থেকেই দুশ্চিন্তায় ছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। তার মাঝে এ দিন সকালেই জলপাইগুড়ির সেই ভয়াবহ বন্যায় মৃতদের উদ্দেশ্যে স্মৃতিতর্পণ করলেন বাসিন্দারা।

১৯৬৮ সালের ৪ অক্টোবর। লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন পুজো প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন গৃহস্থরা। সে দিনও ছিল সকাল থেকেই আকাশের মুখভার। অঝোরে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল সিকিম পাহাড়ে। বৃষ্টি শুরু হয় এই শহরেও। ৪ অক্টোবর গভীর রাতে তিস্তার জল শহরে ঢুকে পড়ে। কিছু সময়ের মধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার নেয়। সে সময় কিং সাহেবের ঘাট লাগোয়া এলাকায় তিস্তা-করলার মোহনা ছিল। শহরে বন্যার জল করলা নদীর মাধ্যমেই প্রথম প্রবেশ করে বলে দাবি। করলা নদীর উপরে যে ক’টি সেতু ছিল, একটি বাদে সবই ভেঙে যাওয়ায় শহরের পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এ দিকে রংধামালি এলাকা দিয়ে ঢোকে তিস্তার জল। সে সময় শহরের আয়তন ছিল তুলনামূলক ভাবে কম। বেশিরভাগ বাড়িই ছিল টিনের কিম্বা পাকা একতলা। সবকিছুই চলে যায় জলের তলায়৷ তৎকালীন জেলখানা (অধুনা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার) ও সদর হাসপাতালের একতলার একাংশ জলের তলায় চলে যায়।

শহরের প্রবীণ বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এই বন্যায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। হাজারখানেকের ওপরে গবাদি পশুও মারা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাজার তিনেক বাড়ি। এই বন্যা এতটাই আকস্মিক ছিল যে, প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলার সময়টুকুও পায়নি বলে দাবি।

এ দিন তিস্তা উদ্যান লাগোয়া করলা সেতুতে থাকা স্মৃতিফলকের সামনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে বন্যায় মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান শিক্ষক ও গবেষক সুমন রায়, পরিবেশপ্রেমী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী-সহ অন্যরা।

সুমন রায় বলেন, “সে সময় শিলিগুড়ির বাসিন্দারা যে ভাবে এই শহরের বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তা ভোলার নয়।” বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী বলেন, “সে সময় আমি বেশ ছোট ছিলাম। পুরো ঘটনা মনে নেই। বড়দের মুখে শুনেছি সেই মর্মান্তিক বন্যার কথা। আজ আমরা সেদিনের হতভাগ্যদের স্মরণ করলাম।”

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *