জলপাইগুড়ি: শনিবার দুপুর থেকেই জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু। সন্ধ্যায় সদর মহকুমাশাসক এসে পুজোর উদ্বোধন করলেন। পুজোর ক’টা দিন ধরাবাঁধা গতের বাইরে অন্যরকম কাটে শহরের সরকারি কোরক হোমের আবাসিকদের। মায়ানমার, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপালের আবাসিকরাও শারদীয় উৎসবের আনন্দে সামিল হয়।
পুজোর গন্ধ লাগল কোরক হোমের প্রতিটি ঘরেই। বর্তমানে এই হোমে থাকা ৬৭ জন আবাসিকই পুজোর নানা কাজে ব্যস্ত। পুজোর কাজে স্বেচ্ছায় হাত লাগিয়েছে ভিন্ দেশি আবাসিকরাও। মূল মণ্ডপে রঙিন কাগজ-সহ নানা উপকরণ দিয়ে দিনকয়েক ধরেই সাজাচ্ছে তারা। এ দিন শেষ মুহুর্তের কাজ সেরে নেয় তারা। মণ্ডপের অনতিদূরেই মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। ওখানে ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত অনুষ্ঠান করবে আবাসিকেরা। পাশেই নিজেদের আঁকা ছবির প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ দিন দুই খুদে আবাসিককে নিয়ে ফিতে কেটে পুজোর উদ্বোধন করেন সদর মহকুমাশাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “সত্যিই খুব সুন্দর কাজ করেছে আবাসিকরা। ওদের সঙ্গে থেকে যেন শৈশব ফিরে পেলাম।” বিশ্ববাংলা শারদ সম্মানে জেলার অন্য দুই পুজো কমিটির সঙ্গে সেরা সমাজ সচেতনতার পুরস্কার পেয়েছে কোরক হোম।
হোম সুপার গৌতম দাস বলেন, “পুজোর আয়োজন ওরাই করে। মণ্ডপ সজ্জা থেকে যাবতীয় কাজ একাধিক দলে ভাগ হয়ে আবাসিকরা নিজেরাই করছে। আমরা সহায়তা করছি।” পুজোর ক’দিন মেনুতে থাকছে লুচি, আলুরদম, পনির, ফুলকপির রোস্ট-সহ রকমারি লোভনীয় পদ। বিজয়া দশমীতে ফ্রায়েড রাইস, পাঁঠার মাংস। হোমের জনাকয়েক আবাসিক কাঠের গুঁড়ো দিয়ে বড় আকারের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছে। সেই প্রতিমা স্থান পেয়েছে মৃন্ময়ী প্রতিমার পাশেই। দেবী সরস্বতীর এক হাতে বীণা, অন্য হাতে রয়েছে হোমের নিজস্ব পত্রিকা ‘কোরক’। এক আবাসিক বলে, “পুজোর দিন গুলোয় পড়তে বসতে হয় না। সারাদিন আমরা খুব মজা করি।”