Home / খবর / জেলায় জেলায় / সুন্দরবনের মৎস্যজীবী গৃহবধূদের পুজো আকর্ষণ বাড়াচ্ছে এলাকায়

সুন্দরবনের মৎস্যজীবী গৃহবধূদের পুজো আকর্ষণ বাড়াচ্ছে এলাকায়

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,কুলতলি : সুন্দরবনের মৈপীঠের গ্রামে মৎস্যজীবী গৃহবধুদের পুজো আকর্ষণ বাড়াচ্ছে এলাকায়।

নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরে চলে সংসার। সুন্দরবনের জঙ্গল ঘেঁষা নদীর ধারে ম্যানগ্রোভ বসাতে ডাক পড়ে এঁদের। গ্রামে বাঘ হানা দিলে পাহারা দিতে নেমে পড়েন এঁরা সবাই।জবা, লক্ষ্মী, যমুনা, দীপালি, মল্লিকা, শ্রাবন্তী সকলেই সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের গৃহবধূ। হেঁসেল সামলে সময় পেলে নেমে পড়েন সমাজের কাজে। মৈপীঠে এই নারী বাহিনী রয়েছে এবারে দুর্গাপুজোর দায়িত্বেও।

গ্রামে তাঁদের পুজো দেখতে ভিড় জমান দূরদূরান্তের মানুষ।মৈপীঠের মধ্য পূর্ব গুড়গুড়িয়া সর্বজনীন পুজো পরিচালনা করেন মহিলারা। সঙ্গে গ্রামের ছেলেরাও সাহায্য করেন। স্কুল প্রাঙ্গণেই হচ্ছে পুজো মণ্ডপ। সাজো সাজো রব গ্রামে। এবার পুজো ৩৮ বছরে পড়েছে। প্রতিমা তৈরির কাজও জোরকদমে চলছে। দুলুরানি, জবা, লক্ষ্মী, শ্রাবন্তীরা প্রতিমা সাজিয়ে তোলেন। গ্রামের পুজো ছেড়ে তাঁরা অন্য কোথাও যেতে চান না।

সারাবছর টেনেটুনে সংসার চলে। কিন্তু এই ক’টা দিন আনন্দ করে কাটাতে চান সকলেই।

তাঁরা বলেন, নদীতে মাছ-কাঁকড়া না ধরলে আমাদের পেট চলবে না। বনদফতর আমাদের ডাকে জঙ্গল ঘেঁষা নদীর ধারে গাছের চারা বসানোর জন্য। বাঘের গর্জন শুনেও আতঙ্ক সঙ্গে করেই কাজ করতে হয়।যেমন আমরা বনবিবির পুজো করি, তেমন মা দুর্গার আরাধনায় ব্রতী হই। মা আমাদের রক্ষা করবে এই আশায়। পুজোর জন্য অনেক মাস আগে থাকতে প্রস্তুতি নিই। গ্রামে ঘুরে চাঁদা সংগ্রহ করি। পুজোতে সব কাজ আমরাই করি। খাওয়া দাওয়া সব একসঙ্গে হয়। অন্য পাড়ার লোকজনও আসে আমাদের পুজোয়।

দুলুরানি, মল্লিকা, শ্রাবন্তীরা বলেন, পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়। আমাদের গ্রামের ছেলে মেয়েরা অংশ নেয়। প্রতিমা বিসর্জনে আমরা ধুমধাম করে মাকে নিয়ে যাই গঙ্গার দিকে। পুজো ঘিরে গ্রামের রাস্তায় মেলা বসে যায়। মণ্ডপের কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না, হেঁসেল সামলে তাও খতিয়ে দেখে প্রমীলা বাহিনী। মৈপীঠের এই জমজমাট পুজো ঘিরে গ্রামে উৎসবের মেজাজ।

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *