Home / খবর / বিশ্ব / মার্কিন চাপে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বিগড়ে যাবে ভারতের?

মার্কিন চাপে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বিগড়ে যাবে ভারতের?

screenshot 20250810 142518~2

আমেরিকার অতিরিক্ত শুল্কের জেরে ভারত-রাশিয়া বাণিজ্য নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল কেনার ‘অপরাধে’ ভারত থেকে আমেরিকায় রফতানি হওয়া পণ্যের উপরে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে ওয়াশিংটন। ফলে মোট শুল্কের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক এই পদক্ষেপকে ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ বলে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং দেশবাসীর স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকেও ভারতের সমর্থন এসেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকোভ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন— সার্বভৌম দেশের নিজস্ব বাণিজ্য সহযোগী বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। এই আবহে শীঘ্রই ভারত সফরে আসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ভারত-রাশিয়ার বন্ধুত্বের শিকড় বহু পুরনো। ১৯৬০-এর দশকে চিন-রাশিয়া দ্বন্দ্বের সময়ে দিল্লি-মস্কো সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। তেল ও অস্ত্র কেনায় বিশেষ ছাড়, বিপুল ঋণসুবিধা, এমনকি তেল অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞ পাঠানোর মতো পদক্ষেপে ভারতের পাশে থেকেছে রাশিয়া। ১৯৭৪ সালে ভারতের প্রথম পরমাণু পরীক্ষার পরে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ও পাকিস্তানপ্রীতির সময়ে দুই দেশের ঘনিষ্ঠতা আরও বেড়ে যায়।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও ভারত রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। রাষ্ট্রপুঞ্জের ধিক্কার প্রস্তাবে বিরত থেকেছে এবং কম দামে অপরিশোধিত তেল কিনে তা থেকে পেট্রোলজাত পণ্য তৈরি করে রফতানি করেছে। গত তিন বছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, আপাতত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করা ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়, কারণ তা সরাসরি দেশের অর্থনীতিকে আঘাত করবে।

শুধু তেল নয়, ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারের অর্ধেকই রুশ তৈরি। রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সহায়তায় নতুন রণতরীও নির্মাণ করছে ভারত। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, রুশ অস্ত্রের বিকল্প পেতে ভারতের আরও কয়েক দশক সময় লাগবে। সব মিলিয়ে, মার্কিন চাপ সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়ার দীর্ঘদিনের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক এক ধাক্কায় ছিন্ন হওয়া প্রায় অসম্ভব।

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *