Home / খবর / জেলায় জেলায় / এসআইআর: চার বিধানসভার ইআরও বদলি, ম্যাপিংয়ে মিল মাত্র ৩৫ শতাংশের, কমিশন স্বীকৃত রাজনৈতিক দল নিয়ে আসানসোলে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের সর্বদল বৈঠক

এসআইআর: চার বিধানসভার ইআরও বদলি, ম্যাপিংয়ে মিল মাত্র ৩৫ শতাংশের, কমিশন স্বীকৃত রাজনৈতিক দল নিয়ে আসানসোলে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের সর্বদল বৈঠক

আসানসোল : জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই বাংলা সহ ১২ টি রাজ্যে ভোটার তালিকায় এসআইআর বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন ( বিশেষ নিবিড় সংশোধন) মঙ্গলবার থেকে বাস্তবায়ন করেছে।

এদিন জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম বর্ধমানে ভোটারের সংখ্যা ২৩ লক্ষ ২৭ হাজার ৫০৩ জন। ২০০২ সালের ভোটার তালিকার ভিত্তিতে, এখনো পর্যন্ত ম্যাপিংয়ে ৩৫ শতাংশের নাম মিলেছে। বিএলওরা ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখছেন। তাতে এখনো পর্যন্ত এই জেলায় প্রাথমিক ভাবে ৪১ শতাংশের মিল পাওয়া গেছে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো বিএলও অ্যাপের মাধ্যমে এই ৪১ শতাংশের নামের পরীক্ষা করতে গিয়ে ৩৫ শতাংশের ম্যাপিং পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গেছে, এখনো ম্যাপিংয়ের কাজ চলছে। তা শেষ হলে এই জেলার সঠিক সংখ্যা জানা যাবে।

এদিকে, বুধবার দুপুরে আসানসোলের কল্যানপুরে নবনির্মিত জেলাশাসক কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবলমের উপস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক হয়। এই বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস সহ অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এই বৈঠকে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক বা এডিএম ( ইলেকশন), ওসি ( ইলেকশন) সহ ইলেকশন দপ্তরের আধিকারিকরা।

জেলাশাসক এই বৈঠকে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের এসআইআর সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন। গোটা প্রক্রিয়া কি ভাবে হবে, সেই বিষয়ে সবাইকে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এই নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সেই মতো পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গেছে। ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএলও বা বুথ লেভেল অফিসাররা ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে গণনার ফর্ম বিতরণ করবেন। ভোটারদের সেগুলি পূরণ করতে হবে। তারপর একটি খসড়া তালিকা জারি করা হবে। ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত খসড়া তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ এবং আবেদন গ্রহণ করা হবে। ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি এবং যাচাইকরণ চলবে। সবশেষে ৭ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ইআরও বা ইলেকটোরাল রেজিষ্ট্রেশন অফিসার ও এইআরও বা সহকারী ইলেকটোরাল রেজিষ্ট্রেশন অফিসারের প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়াও শীঘ্রই শুরু হবে। ইতিমধ্যেই এই জেলার চারটি বিধানসভার ( রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, দুর্গাপুর ( পূর্ব) ও দুর্গাপুর (পশ্চিম) ইআরও বদলি হয়েছেন। তার মধ্যে দুজন এদিন কাজে যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বাকি দুজন কাজে যোগ দেবেন। ওসি ( ইলেকশন)ও বদলি হয়েছেন। পরে বিধানসভার ইআরওরা সর্বদলীয় বৈঠক করবেন।

তিনি আরো বলেন, ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় যারা ছিলেন তাদের নামের সাথে ম্যাপিং করা হবে। যদি এই মুহুর্তে কোনও ভোটারের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় না থাকে, তাহলে তার বাবা-মা বা রক্তের সম্পর্কের কারও নামের সাথে মিল করা হবে। তিনি বলেন, ম্যাপিং প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে যাতে একটি পরিষ্কার ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি করা যায়।

এদিনের বৈঠক শেষে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে তৃনমুল কংগ্রেসের উৎপল সেন বলেন, আমরা গোটা প্রক্রিয়ার দিকে নজর রাখছি। এই জেলা মুলত শিল্পাঞ্চল এলাকা। অনেকে বাইরে থেকে এসেছেন ও থাকছেন। অনেকে চলে গেছেন। তাদের কি হবে, এমন কিছু প্রশ্ন আমরা এদিনের বৈঠকে রেখেছিলাম। জেলাশাসক জানিয়েছেন, কোনও কিছুতেই কোনও সমস্যা হবেনা। নির্বাচন কমিশন যেমন নির্দেশ দেবে, তেমন করা হবে।

বিজেপির প্রশান্ত চক্রবর্তী ও তাপস রায় এবং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, আমরা সবাই চায় একটি পরিষ্কার ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি করা হোক। বিভিন্ন রাজ্য ও জেলা থেকে এই জেলায় কাজ করতে আসা মানুষদের নাম থাকা সহ বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে এদিনের বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। জেলাশাসকের সামনে সবকিছুই তুলে ধরা হয়েছে। তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে আমাদেরকে জানাবেন।

কংগ্রেসের জেলা সভাপতি এদিন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মাত্র ৩৫ শতাংশ মিল পাওয়া গেছে। বিএলওরা যদি তাদের সমস্যা গুলো দুর করতে না পারেন, তাহলে এই জেলা সবচেয়ে খারাপ হবে। যেখানে ১০০ শতাংশ মিল হবেনা।

alternatetext
Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *