কোলফিল্ড টাইমস: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সফল হওয়ার পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার এক্স (আগের টুইটার)-এ মোদী জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বাণিজ্য আলোচনা নিয়েও কথা হয়েছে।
মোদী লিখেছেন, “আমার বন্ধু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছি এবং ঐতিহাসিক গাজা শান্তি পরিকল্পনার সাফল্যের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছি। পাশাপাশি ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি। আগামী কয়েক সপ্তাহে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।”
আরও এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছি এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনায় অগ্রগতির জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি। পণবন্দি মুক্তি ও গাজার মানুষের জন্য মানবিক সাহায্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। সন্ত্রাসবাদ যে কোনও রূপে, যে কোনও জায়গায় অগ্রহণযোগ্য—এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছি।”
বৃহস্পতিবার সকালে ইজরায়েল জানায়, গাজা যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দি মুক্তির প্রথম ধাপের চুক্তিতে সব পক্ষই স্বাক্ষর করেছে। গত মাসে ট্রাম্পের ঘোষিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার ভিত্তিতে মিশরে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
ইজরায়েলি মুখপাত্র শোশ বেদরোসিয়ান জানান, “আজ সকালে মিশরে প্রথম ধাপের চূড়ান্ত খসড়ায় সব পক্ষই সই করেছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে।”
চুক্তি অনুযায়ী, ইজরায়েলি সেনা গাজা থেকে সরে যাবে এবং বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে শতাধিক প্যালেস্টাইনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ব্যাপক মানবিক সাহায্য পাঠানো হবে।
ট্রাম্প রবিবার জেরুজালেম সফরে যেতে পারেন, পাশাপাশি মিশর ও গাজাতেও যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা পরিচালনার জন্য একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রস্তাবও রয়েছে, যার নেতৃত্বে থাকবেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে এই অংশটি নিয়ে এখনও বিস্তারিত আলোচনা হয়নি।
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা
মোদীর এই আলোচনার আগে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানান, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রস্তাবিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, “আমরা নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, এবং আশা করছি নভেম্বরের মধ্যেই চুক্তি চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।” গয়াল আরও জানান, ভারতের অবস্থান পরিষ্কার—দেশের কৃষক ও দুগ্ধশিল্পের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখাই প্রধান অগ্রাধিকার।
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে টানা চতুর্থ বছরের মতোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে রয়েছে। এই সময়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩১.৮৪ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ভারতের রপ্তানি ৮৬.৫ বিলিয়ন ডলার। ভারতের মোট পণ্যের রপ্তানির প্রায় ১৮ শতাংশই যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।