দার্জিলিংয়ের ভয়াবহ দুর্যোগে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারের এক জন সদস্যকে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে এই বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মোট ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে মিরিক-কালিম্পঙে এবং নাগরাকাটায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও পাঁচ জন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মিরিক এলাকায়।
ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করতে গিয়ে মমতা বলেন, “টাকা কোনওদিন জীবনের বিকল্প হতে পারে না। তবে এটি আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। যাতে পরিবারগুলো অন্তত সামান্য ভরসা পায়।”
মুখ্যমন্ত্রী ফের অভিযোগ তুলেছেন, ভুটান ও সিকিম থেকে ছেড়ে দেওয়া জল এবং ডিভিসি-র মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে উত্তরবঙ্গে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তিনি একে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে উল্লেখ করেন।
দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। আটকে পড়া পর্যটকদের নিরাপদে নামিয়ে আনার জন্য ৪৫টি ভলভো বাস ও রাজ্য পরিবহণ দফতরের বাস নামানো হয়েছে। শিলিগুড়িতে প্রায় ২৫০ জন পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিরিক ও নাগরাকাটায় চালু হয়েছে কমিউনিটি কিচেন। হোটেলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পর্যটকদের থেকে অতিরিক্ত টাকা না নিতে।
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গে পৌঁছে গিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার তিনি হাসিমারা ও নাগরাকাটার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। মঙ্গলবার মমতা স্বয়ং যাবেন মিরিকে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে দার্জিলিঙের একাধিক এলাকায় ধস নামে, নদীগুলির জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যায়, বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়ক ১০ নম্বর। রবিবার নবান্ন থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পর এদিন উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী।