কলকাতায় পরপর তড়িদাহত হয়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসল হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করে কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসি-কে এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। একই সঙ্গে নিকাশি ব্যবস্থার খামতি নিয়ে কলকাতা পুরসভাকেও রিপোর্ট দিতে হবে। মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকারকেও জানাতে হবে আদালতে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ নভেম্বর।
গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোরের টানা প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয় কলকাতা। সেই সময় শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় আট জনের। পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর ও নরেন্দ্রপুরে আরও দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০-এ।
এই মৃত্যুর জন্য সরাসরি সিইএসসি-কে দায়ী করে মঙ্গলবারই ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, কলকাতায় বিদ্যুতের আধুনিকীকরণের কাজ না করে সংস্থাটি অন্য রাজ্যে বিনিয়োগ করছে। একই সঙ্গে তিনি সিইএসসি-কে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেন।
বুধবার ভবানীপুরে এক দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, মৃতদের পরিবারের আর্থিক সহায়তায় রাজ্য সরকার ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে। পাশাপাশি সিইএসসি যদি চাকরির ব্যবস্থা না করে, তবে রাজ্য সরকার নিজেই পরিবারপিছু এক জনকে হোমগার্ডের চাকরি দেবে। একই সঙ্গে তিনি অনুরোধ জানান, সিইএসসি যেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়।
দুর্যোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রকৃতিকে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়। তবে জল নেমে গিয়ে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে।’’ ফরাক্কা ও মাইথনের মতো স্থানে ড্রেজ়িং-এর অভাব এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যের বৃষ্টির জলের চাপ পশ্চিমবঙ্গকেই সামলাতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।










