রূপনারায়ণপুর : সূঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হওয়ার মতো মারাত্মক ঘটনা সামনে এল রূপনারায়ণপুরে।
হাতে কাজ নেই বলে বেকার যুবককে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রেখে এখন বিশ্বাসের অমর্যাদায় শিউরে উঠছেন এক ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগ, গত পাঁচ মাস ধরে ধাপে ধাপে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার সামগ্রী গায়েব করেছে তাঁর এক কর্মী। তবে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সেই কর্মী এবং তার দুই সাগরেদ রূপনারায়ণপুর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। আপাতত তাদের পুলিশি হেফাজতে রেখে তদন্ত চলছে এবং মালপত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।
ঘটনা রূপনারায়ণপুর সামডি রোড এলাকায়। এখানেই স্টেশনারি এবং মুদি সামগ্রীর হোলসেল ব্যবসায়ী গৌতম সেনের ব্যবসাকেন্দ্র। মাস পাঁচেক আগে তাঁর কাছে কাজে ঢোকে ছোটু বাউরী বলে একজন। এদিকে মেয়ের বিয়ের তোড়জোড় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন গৌতম বাবু। যদিও নিয়মিত তিনটি গোডাউন থেকে মালপত্র বের করা, কাউন্টার সামলানো সবই তিনি করছিলেন কর্মীদের নিয়ে। এরই মধ্যে মাঝে মাঝে সন্দেহ হচ্ছিল জিনিসপত্রের মজুত নিয়ে। কিন্তু তার সন্দেহ দৃঢ় হল যেদিন তারই অন্য এক কর্মী গৌতম বাবুকে জানালেন তাদের একটি গোডাউনের বাইরে নানান সামগ্রী বের করা আছে। কিন্তু সেগুলি দোকানে নিয়ে আসা হচ্ছে না। এরপরই দেখা যায় রাতের দিকে ওই জিনিসগুলি সন্তর্পণে গোডাউনের পিছনের দিকে নিয়ে চলে যাচ্ছে দুই ব্যক্তি। বিষয়টি সামনে আসার পরেই রূপনারায়ণপুর পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন গৌতম সেন।
সেই অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পারে, গোডাউন থেকে মালিকের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ছোটু বাউরি হরলিক্স, বিভিন্ন ধরনের সাবান, ঘি, ইত্যাদি মূল্যবান সামগ্রী সরিয়ে ফেলতো। সেগুলি বাইকে চাপিয়ে নিয়ে যেত রূপনারায়ণপুর রূপনগরের রামনাথ পাল এবং গুরুদোয়ারা এলাকার দিলীপ মণ্ডল। পুলিশ ছটুর সঙ্গেই এই দুজনকেও পাকড়াও করেছে। এদিকে গোডাউন থেকে চুরি হয়ে যাওয়া সামগ্রীর অর্থমূল্য নিয়ে দ্বিমত থাকলেও নিজের কর্মীর এই বিশ্বাস ভঙ্গতায় অত্যন্ত হতাশ গৌতম বাবু। তিনি বলেন, বিশ্বাসের মর্যাদা রাখলো না ছটু।
এদিকে ১৭ সেপ্টেম্বর ধৃতদের আসানসোল আদালতে হাজির করে চার দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এখন এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত এবং বিশাল অংকের এইসব সামগ্রী কোথায় কিভাবে পাচার করা হয়েছে তার সন্ধান করছে পুলিশ।