নেপালে চলতে থাকা দেশজোড়া বিক্ষোভের জেরে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। গণবিদ্রোহের দাবির কাছে নতিস্বীকার করে মঙ্গলবার তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। সেনাবাহিনীর তরফ থেকেও তাঁকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছিল। সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেলের সঙ্গে বৈঠকের পরেই ওলি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
ওলি পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, রাজনৈতিক সমাধানের পথ সুগম করতেই তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন। তবে সূত্রের খবর, পদত্যাগের পর দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। সম্ভাব্য গন্তব্য হতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাই। নিরাপত্তার জন্য সেনার কাছে ইতিমধ্যেই অনুরোধ জানিয়েছেন ওলি।
বিক্ষোভকারীদের রোষে জেরবার হয়ে পড়েছেন ওলির মন্ত্রিসভার সদস্যরাও। একাধিক মন্ত্রীর বাড়ি এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে জনতা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। মঙ্গলবার সকালেই সর্বদল বৈঠক ডাকেন ওলি, কিন্তু তার আগেই তাঁকে চাপে পড়ে পদত্যাগ করতে হয়।
সমাজমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ক্ষোভ ছড়ায় দেশ জুড়ে। ছাত্র-যুবদের নেতৃত্বে কাঠমান্ডুতে শুরু হয় তীব্র বিক্ষোভ। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় অন্তত ১৯ জনের। চাপে পড়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই চলতে থাকে ওলির পদত্যাগের দাবি। শেষ পর্যন্ত সেনার নিরাপত্তার আশ্বাস নিয়েই তিনি ইস্তফা দেন।
এদিকে, ওলি যাতে দেশ ছাড়তে না পারেন, সে জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দর। বাতিল হয়েছে সমস্ত বিমান পরিষেবা। বিমানবন্দরে মোতায়েন রয়েছে ৩০০-র বেশি সেনা। কয়েকটি হেলিকপ্টার রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
নেপালের পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের সতর্ক থাকতে এবং প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলতে।