Home / খবর / বিশ্ব / সুশীলা কার্কী, বলেন্দ্র শাহের পর নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার দৌড়ে নতুন নাম! কে এই কুল মান ঘিসিং?

সুশীলা কার্কী, বলেন্দ্র শাহের পর নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার দৌড়ে নতুন নাম! কে এই কুল মান ঘিসিং?

কোলফিল্ড টাইমস: রাজনৈতিক অস্থিরতা ও তরুণদের আন্দোলনের মধ্যে নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে নতুন এক নাম উঠে এসেছে—কুল মান ঘিসিং। সুশীলা কার্কী না বলেন্দ্র শাহের পর চর্চায় এখন তাঁর নাম। কে এই কুল মান?

জেন জি আন্দোলনের প্রস্তাব

বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত জেন জি গোষ্ঠীর একাংশ প্রাক্তন নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের (এনইএ) নির্বাহী প্রধান কুল মান ঘিসিংকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে প্রস্তাব করে। তাঁদের বিবৃতিতে তাঁকে বর্ণনা করা হয় “দেশপ্রেমিক ও সর্বজনপ্রিয়” ব্যক্তি হিসেবে।

এই প্রস্তাব আসে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা অস্থিরতার প্রেক্ষিতে। সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্ত দুর্নীতি ও বেকারত্ববিরোধী বৃহত্তর আন্দোলনে রূপ নেয়, যা দেশ জুড়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি করেছে।

ব্ল্যাকআউটের অবসান ঘটানো মানুষ

একসময় নেপাল দিনে ১৭–১৮ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে অন্ধকারে ডুবে থাকত। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঘিসিং এনইএ-র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েক মাসের মধ্যেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়।

তিনি বিদ্যুৎ বণ্টনে নতুন পরিকল্পনা, চাহিদাভিত্তিক সরবরাহের অগ্রাধিকার ও বিদ্যমান সম্পদের সঠিক ব্যবহার করে দেশজুড়ে লোডশেডিং দূর করেন। এর ফলে শুধু বিদ্যুৎ সরবরাহই স্বাভাবিক হয়নি, এনইএ লাভজনক প্রতিষ্ঠানেও পরিণত হয়। এই সাফল্য তাঁকে দুর্নীতিমুক্ত ও কার্যকর আমলা হিসেবে ব্যতিক্রমী মর্যাদা এনে দেয়।

ভারতীয় যোগসূত্র

১৯৭০ সালে রামেচ্ছাপে জন্ম নেওয়া ঘিসিং পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করেন। পরে নেপালে পাওয়ার সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ মাস্টার্স এবং পোখরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন।

ভারতের সঙ্গে জ্বালানি খাতে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ২০২৪ সালে দ্য হিমালয়ান টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ভারতের সহায়তা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত সীমান্ত পেরিয়ে বিদ্যুৎ বাণিজ্য ও রিয়েল-টাইম ডেটা বিনিময়ে।”

ধলকেবর-মুজাফফরপুর ট্রান্সমিশন লাইন নেপালকে বর্ষায় উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রপ্তানি ও শীতকালে ঘাটতি পূরণের জন্য বিদ্যুৎ আমদানির সুযোগ দিয়েছে। পাশাপাশি, ভারতীয় বিনিয়োগে অরুণ তৃতীয় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে তিনি “সহযোগিতার আদর্শ মডেল” বলে উল্লেখ করেছেন।

কেন জেন জি তাঁকে চাইছে

দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে ঘিসিংয়ের সৎ ভাবমূর্তি ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তাঁকে স্বাভাবিকভাবেই পছন্দের প্রার্থী করে তুলেছে। তাঁদের বিবৃতিতে তাঁরা প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কীকে “অযোগ্য ও প্রবীণ” বলে সমালোচনা করেন এবং কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ প্রার্থী হতে অস্বীকৃতি জানানোর কথাও উল্লেখ করেন।

তবে সব পক্ষ একমত নয়। উই নেপালি গোষ্ঠীর সুধান গুরুং সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কীর নেতৃত্ব মেনে নিতে প্রস্তুত।”

ঘিসিং নিজে আদৌ রাজনীতিতে আসবেন কি না তা স্পষ্ট নয়। তবে আপাতত, যিনি দেশকে অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরিয়েছিলেন, তিনি আবার আলোচনার কেন্দ্রে—এইবার অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য প্রধান হিসেবে।

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *