লাউদোহা, পশ্চিম বর্ধমান: ভোটার তালিকায় সংশোধন বা এসআইআরের পর বাংলায় তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই সেটা আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু সংবিধান মেনে তা হবেই। ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে চার ধরনের ভোটারের নাম। তার মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশি মুসলমান ও রোহিঙ্গাদের নাম । এছাড়াও, ভুয়ো ভোটার, দুটো নাম থাকা ভোটার ও মৃত ভোটার। ২০২৬ এ রাজ্যে বদল হবে, বদলাও হবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পশ্চিম বর্ধমান জেলার পান্ডবেশ্বরে দলের এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে এমনই বললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
আরজি কর, কসবা কান্ডের বিচার সহ রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষার দাবিতে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি রাজ্য জুড়ে শুরু করেছে ” কন্যা সুরক্ষা যাত্রা” কর্মসূচি ।
মঙ্গলবার পান্ডবেশ্বরের দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের গোগলা অঞ্চলে দলের এই কর্মসূচিতে যোগ দেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । এদিন প্রথমে পানশিউলি মোড় থেকে মাদারবনি পর্যন্ত কন্যা সুরক্ষা যাত্রা উপলক্ষে একটা মিছিল হয়। মিছিল শেষে সেখানে ইসিএলের গ্রাউন্ডে হয় জনসভা। মিছিলে শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য, পান্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি, বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় সহ অন্যরা ।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হন । তিনি বলেন, এই সরকার শিক্ষকদের চাকরি খেয়েছে, রাজ্যে মহিলাদের কোন নিরাপত্তা নেই । নির্যাতন, ধর্ষণ বেড়েই চলেছে । নির্যাতিতা মহিলারা বিচার পান না। ধর্ষকরা পায় প্রশ্রয় ও সাহস । তিনি বলেন, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে গণনা কেন্দ্রে কারচুপি করে পান্ডবেশ্বর থেকে বিধায়ক হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তার নেতৃত্বে এই এলাকায় কয়লা ও বালির লুট চলছে । পুলিশের একাংশ এই কাজে মদত দিচ্ছে বলে দাবি তার । বিরোধী দলনেতা বলেন, ২০২৬ সালে এই রাজ্যে বদল হবে, বদলাও হবে। যারা এখন অত্যাচার চালাচ্ছে তাদের খুঁজে বার করে সাজা দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি । রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, ভোটার তালিকা বিশেষ সংশোধন বা এসআইআর হবে এই রাজ্যেও । বাংলাদেশী মুসলমান আর রোহিঙ্গাদের নাম বাদ যাবে ভোটার তালিকা থেকে । তাই ভয় পেয়ে তা আটকাতে চাইছে তৃণমূল । ২০২৬ এর পর তৃণমূলকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে জানান তিনি । তিনি বলেন, ইউপি, বিহারে জঙ্গল রাজ খতম করে সেখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে বিজেপি । বাংলায় তারা ক্ষমতায় এলে এখানেও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।
শুভেন্দুর সাফ বার্তা, গুন্ডামি, অবৈধ খনি ও মাফিয়ার রাজত্ব আর চলবে না। পুলিশ, কয়লা, বালি মাফিয়াদের সঙ্গে আঁতাত করে দীর্ঘদিন ধরে বেআইনি কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে। তবে এই ঘটনা শুধু পান্ডবেশ্বরেই নয়, গোটা রাজ্যেই ঘটছে। সব জায়গায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। তার সঙ্গে গুন্ডামি চলছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেসকেও একহাত নেন। কংগ্রেসকে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের ” বি-টিম” আখ্যা দিয়ে বলেন, এরা সবাই রাজনৈতিক নাটক সাজিয়ে হিন্দু ভোট ভাগ করার চেষ্টা করছে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতার আক্রমণকে কটাক্ষ করে রাজ্যের শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব বলেন , বহিরাগতদের নিয়ে এসে কন্যা সুরক্ষা যাত্রা করছেন। এর থেকে লজ্জার আর কি হতে পারে? এই এলাকার মানুষেরা জানে কারা তাদের পাশে আছেন। আর কারা শুধু রাজনীতি করে।