উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টি ও ধসে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবারই সেখানে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সারাদিন নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার বিকেলের মধ্যেই তিনি পৌঁছে যাবেন শিলিগুড়ি, সেখান থেকেই পর্যবেক্ষণ করবেন গোটা অঞ্চলের অবস্থা।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় শুরু হয়েছে লাগাতার ভারী বর্ষণ। বহু জায়গায় ধস নেমে বন্ধ হয়েছে সড়ক যোগাযোগ। তিস্তার জল উঠে এসেছে জাতীয় সড়কের উপর। ইতিমধ্যেই দার্জিলিং থেকে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ভূটানে প্রবল বর্ষণের জেরে উত্তরবঙ্গে জলস্ফীতি আরও বেড়েছে, যার ফলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভূটানের অতিবৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গে জলের চাপ বেড়েছে। এই দুর্যোগ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সকাল ৬টা থেকে আমি ক্রমাগত মনিটরিং করছি, ডিজি এবং জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।”
গত ১২ ঘণ্টায় টানা ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাতটি জায়গায় ধস নামায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, “আমি নিয়মিত পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। আশা করছি সোমবার বিকেল ৩টার মধ্যে পৌঁছে যাব এবং সরেজমিনে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করব।”
পর্যটনে ভরা মৌসুমে বিপর্যয়ের কারণে বহু পর্যটক বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন। তাঁদের নিরাপদে ফেরানোর আশ্বাস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা কেউ তাড়াহুড়ো করবেন না। যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। রাজ্য সরকার ফেরার ব্যবস্থা করবে। হোটেলগুলি যেন অতিরিক্ত ভাড়া না নেয়, প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।”
মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, যদিও ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এখনও নির্দিষ্ট হয়নি।
রবিবার কলকাতায় নির্ধারিত দুর্গাপুজো কার্নিভালের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “সব দিক বিচার করেই আমি সোমবার উত্তরবঙ্গে যাচ্ছি। মানুষের এই কঠিন সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোই এখন সবচেয়ে জরুরি।”