কমিশনে সর্বদল বৈঠক। ছবি: রাজীব বসু
কোলফিল্ড টাইমস: জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজকুমার আগরওয়ালের দফতরে সর্বদল বৈঠক অনুষ্ঠিত হল। বিকেল ৪টে থেকে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বৈঠক চলে, যেখানে আধার কার্ড ও এনুমারেশন ফর্ম ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে তীব্র বিতর্ক হয়। পরে সাংবাদিক বৈঠকে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন দলের প্রতিনিধিরা।
আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই এসআইআর প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে অনেক মানুষ আত্মহত্যা করছেন, তার দায় নিতে হবে কমিশনকে।” তিনি জানান, “১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দিলীপকুমার শাহ আত্মহত্যা করেছেন। কমিশনকে আগে নিজেদের মা-বাবার জন্ম শংসাপত্র জমা দিতে হবে, তারপর সাধারণ মানুষকে জবাবদিহি করতে বলবেন।” তাঁর অভিযোগ, “এই এসআইআর আসলে সিএএ-এনআরসি-র অংশ, সবটাই পূর্বপরিকল্পিত খেলা।”
মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “একজন বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলেই তৃণমূল প্রতিবাদে নামবে। এত ভোট হয়েছে, নাগরিকেরা যদি বৈধ না হন, তবে প্রধানমন্ত্রীকেই ইস্তফা দিতে হবে।” তাঁর অভিযোগ, “কমিশন-বিজেপি ভাই-ভাই হয়ে কাজ করছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের সই দিলে ভোটার করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে শিশির বাজোরিয়া বলেন, “তৃণমূলের অবস্থান এখন পাল্টে গিয়েছে। আগে তারা বলেছিল, এসআইআরের বিরোধিতা করবে, এখন বলছে নির্ভুল ভোটার চাই। আত্মহত্যার অভিযোগ তোলা হচ্ছে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য।” তিনি আরও দাবি করেন, “৬ হাজার ভুল নাম বিএলও থেকেই এসেছে। এসআইআরকে স্বাগত জানাচ্ছে বিজেপি।”
বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বৈঠকে মনে হল, সিইও নিজেও তৈরি নন। নাগরিকত্ব প্রমাণের অধিকার কমিশনের নেই, অথচ ১২টি নথি চাওয়া হচ্ছে। ২০০২ সালের তালিকা কেন ধরা হচ্ছে, কে নির্ধারণ করেছে?”
বৈঠকের শেষে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল বলেন, “সব দলের সহযোগিতা কাম্য। বুথভিত্তিক যত বেশি এজেন্ট নিয়োগ করা সম্ভব, ততই কাজ নির্ভুল হবে।” তিনি জানান, “আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত বিএলওদের প্রশিক্ষণ চলবে। প্রত্যেক ভোটারের জন্য কিউআর কোড তৈরি হবে এবং তার পর ছাপার কাজ শুরু হবে। রাজ্যে মোট ৭.৬৬ কোটি ভোটার রয়েছেন, প্রত্যেকের বাড়িতে বিএলও যাবেন।”










