সোমবার ভারতের ৫৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। হিন্দিতে শপথ নেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।
শপথ নেওয়ার পর মা-বাবা ও পরিবারের বড়দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। তাঁর স্কুল-কলেজের বন্ধুরা, শিক্ষক, গ্রামের পরিচিতজন মিলিয়ে প্রায় এক হাজার আমন্ত্রিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। এদের মধ্যে ২৩৫ জন রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা সুপ্রিম কোর্টের অডিটোরিয়ামে বসে অনুষ্ঠান দেখেন।
এক মাস আগেই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি গাভাই কেন্দ্রকে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে সূর্য কান্তের নাম সুপারিশ করেছিলেন। সেই অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মুর্মু তাঁকে নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করেন। রবিবার গাভাই অবসর নেওয়ায় সোমবার দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। তিনি ২০২৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই পদে থাকবেন।
দুই দশকের বিচারিক জীবনে বিচারপতি সূর্য কান্ত বহু গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন। কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বেঞ্চে ছিলেন তিনি। পেগাসাস সফটওয়্যার মামলাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। রাষ্ট্রদ্রোহ আইন—আইপিসি ১২৪এ—বাতিল হওয়া মামলাটিও তাঁরই এজলাসে হয়েছিল। জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে বিচার এড়ানো যাবে না—এ রায়েও তিনি গুরুত্বপূর্ণ মত দেন।
১৯৬২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানায় জন্ম বিচারপতি সূর্য কান্তের। ১৯৮৪ সালে হিসারে আইনজীবী হিসেবে কেরিয়ার শুরু। পরে পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করেন। ২০০০ সালে হরিয়ানার সর্বকনিষ্ঠ অ্যাডভোকেট জেনারেল হন। ২০০৪ সালে পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পান। এরপর ২০১৮ সালে হিমাচলপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হন তিনি। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০২৪ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট লিগাল সার্ভিস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
