Home / খবর / দেশ / কার্বাইড গান: দিওয়ালিতে মধ্যপ্রদেশে দৃষ্টিশক্তি হারাল ১৪ শিশু, হাসপাতালে ভর্তি ১২২-এর বেশি

কার্বাইড গান: দিওয়ালিতে মধ্যপ্রদেশে দৃষ্টিশক্তি হারাল ১৪ শিশু, হাসপাতালে ভর্তি ১২২-এর বেশি

কোলফিল্ড টাইমস: দিওয়ালির আনন্দের মধ্যেই এই বছর নতুন করে উঠে এসেছে বিপজ্জনক একটি ট্রেন্ড—স্থানীয়ভাবে তৈরি “কার্বাইড গান” বা দেশি ফায়ারক্র্যাকার গান। খেলনা হিসেবে বাজারে ছড়িয়ে পড়া এই যন্ত্রটি বেশ কয়েক সেকেন্ডে ভয়াবহ বিস্ফোরণ সৃষ্টি করে, ফলস্বরূপ গত তিন দিনে মধ্যপ্রদেশ জুড়ে শতাধিক শিশু গুরুতর চক্ষু-আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং ১৪ শিশুর দৃষ্টিশক্তি স্থায়ীভাবে হারানোর খবর পাওয়া গেছে।

হাসপাতালের সূত্রে জানা গেছে, মোট ১২২ জনের বেশি শিশু বিভিন্ন জেলা—বিশেষত বিদিশা, ভোপাল, ইন্দোর, জাবালপুর ও গ্বালিয়রে—চোখের আঘাত নিয়ে ভর্তি হয়েছে, মাত্র হামিদিয়া হাসপাতালে ৭২ ঘণ্টায় ২৬ জন ভর্তি হয়েছে। বিদিশা জেলার মণ্ডপ-বাজারগুলোতেই এই কার্বাইড গান খোলাখুলি বিক্রি হচ্ছিল, অথচ সরকারের ১৮ অক্টোবর জারি করা নিষেধাজ্ঞা থাকছিল।

রাস্তার ধারে মাত্র ১৫০–২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া এই নকশাহীন ডিভাইসগুলো প্লাস্টিক বা টিনের নল দিয়ে বানানো হয়। ভেতরে ক্যালসিয়াম কার্বাইড—এই রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে তীব্র বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের সময় ধ্বংসাবশেষ ও জ্বলন্ত কার্বাইড বাষ্প মুখমণ্ডল ও চোখে সোজা আঘাত করে, চিকিৎসকরা বলছেন এর ফলে রেটিনা পুড়ে যায়, পুতলি ছিঁড়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে স্থায়ী অন্ধত্ব চলে আসে।

হামিদিয়া হাসপাতালের সিএমএইচও ডা. মানীষ শর্মা বলেন, “এই ডিভাইসটি খেলনা নয়, এটি একটি সহজাত বিস্ফোরকই। বিস্ফোরণে ধাতব কণিকা ও কার্বাইড বাষ্প চোখে ঢুকলে রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়—অনেকে এমন রোগী দেখেছি যাদের পুতলি রাপচার হয়েছে এবং তাদের দৃষ্টিশক্তি স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে পারে।” কিছু রোগী আইসিইউতে চিকিৎসাধীন এবং অনেকেরই পূর্ণ দেখার সম্ভাবনা নেই।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিও দেখে বহু কিশোর-কিশোরী বাড়িতে এসব ‘কার্বাইড গান’ বানানোর চেষ্টা করছিল; আর বিক্রেতারা স্থানীয় মেলা ও রাস্তার ধারে এটিকে “মিনি ক্যানন” নামে বিক্রি করছে—কোনো সুরক্ষা বিধি ছাড়াই। বিদিশা পুলিশ ইতোমধ্যে অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বিশিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা আর. কে. মিশ্রা বলেছেন, “অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; যারা বিক্রি বা প্রচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

অন্যদিকে চিকিৎসক ও প্রশাসন দু’ই অভিভাবকদের প্রতি কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে—কোনোভাবেই এই ধরনের তৈরি ফায়ারক্র্যাকার বা কার্বাইড গান কিনবেন বা সন্তানদের সেটা বানাতে দেবেন না। ছোট শিশুকে দায়িত্বহীনভাবে এ ধরনের পদার্থের কাছে জড়াতে দেওয়া মানে তাদের জীবন ও দৃষ্টির ওপর বড় আশঙ্কা নিয়ে আসা।

এই ঘটনায় সরকারি ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে দ্রুত নিয়মিত চালান ও বিক্রেতাদের খুঁজে বের করে বাজার বন্ধ করে দেওয়ার দাবি উঠেছে—তবে ততক্ষণে অনেক পরিবারের জীবনে অনিবার্য ক্ষতি হয়ে গেছে।

alternatetext
Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *