উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন : সুন্দরবনের মহিলাদের স্বনির্ভরতার পথে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ — তাঁদের হাতে প্রক্রিয়াজাত মধু এবার উড়াল দেবে আটলান্টিক পেরিয়ে আমেরিকার বাজারে।
গোসাবা ব্লকের বালি দ্বীপে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ একটি মধু প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে। ভ্যালু নেটওয়ার্ক ভেঞ্চার, সাসটেইনেবল গ্রিন ইনিশিয়েটিভ ও বালি নেচার ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার ব্যয়ে তৈরি হয়েছে এই ইউনিট। স্থানীয় মউলদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা হবে মধু, যা সম্পূর্ণ বিশুদ্ধভাবে প্রক্রিয়াজাত করে বোতলবন্দি করা হবে ‘বাহা মৌ’ বা ‘বাহা মধু’ নামে।
এই মধু শুধু রাজ্যের বাজারেই নয়, জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, দেশের অন্যান্য রাজ্য এবং আমেরিকাসহ একাধিক দেশের বাজারেও পৌঁছবে। ইতিমধ্যেই এই পণ্য আমেরিকার বাজারে বিক্রির ছাড়পত্র পেয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
প্রথম পর্যায়ে গ্রামের ৩০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পে। তাঁরা পূর্বে সুন্দরবনের নদীর চর ও জঙ্গলে ম্যানগ্রোভ রোপণ ও পরিচর্যার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই কাজের পুরস্কার হিসেবেই মিলেছে স্বনির্ভরতার এই নতুন সুযোগ।
সম্প্রতি প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর রাজেন্দ্র জাখের। তিনি বলেন, “গ্রামের মহিলারা যদি আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারেন, তাহলে তাঁদের জঙ্গল নির্ভরতা অনেকটাই কমবে। ফলে বাঘ-মানুষ সংঘাতও হ্রাস পাবে।”
বিশ্বজুড়েই সুন্দরবনের মধুর সুনাম রয়েছে। বিশেষ করে কোভিড-পর্বের পর এই মধুর চাহিদা বেড়েছে বহু গুণ। সেই বাড়তি চাহিদার দিকেই নজর রেখে নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ — যা একদিকে যেমন স্থানীয় মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করবে, তেমনই পরিবেশ রক্ষার বার্তাও দেবে বিশ্বকে।










