পাঁজি অনুযায়ী আজ, বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমী। মায়ের বিসর্জনের দিন। তবে ছুটির দিনে অধিকাংশ পুজোমণ্ডপে আজই শুরু হচ্ছে নিরঞ্জন পর্ব। আগামীকাল, শুক্রবার থেকে ঘাটে ভিড় আরও বাড়বে বলে অনুমান। সেই কারণেই নিরঞ্জন অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পুরসভা ও কলকাতা পুলিশ আগে থেকেই পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে।
কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে ঘাটে নিযুক্ত করা হয়েছে সাফাইকর্মীদের। বুধবার নবমীর দুপুরে পুর কমিশনার ধবল জৈন সব বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। প্রতিটি ঘাটে দায়িত্বে থাকবেন একজন করে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। তাঁদের সঙ্গে থাকছে পুরসভার সাফাইকর্মী দল ও অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা। ঘাটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিসর্জন নিয়ন্ত্রণে মূল দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, আজ থেকেই ঘাটে ঘাটে মোতায়েন হচ্ছে বাড়তি পুলিশ বাহিনী। রিভার ট্রাফিক পুলিশ টহল দেবে গঙ্গায়। আকাশপথে নজরদারির জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ড্রোন ক্যামেরা, পাশাপাশি বসানো হয়েছে অতিরিক্ত সিসিটিভি। জল পুলিশের দফতরে রাখা হয়েছে একটি বিশেষ রেসকিউ টিম— যেখানে থাকছেন প্রশিক্ষিত ডুবুরিরা। বাজে কদমতলা ঘাটে থাকছে ৬ জন ডুবুরিসহ একটি বিশেষ লঞ্চ।
বাগবাজার, বাজে কদমতলা, গোয়ালিয়র ও নিমতলা ঘাটে থাকছে ডিএমজি বাহিনীর সদস্যরা। সাতটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে তৈরি করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। প্রতিটি ঘাটে দায়িত্বে থাকবেন একজন ইন্সপেক্টর, যাঁদের তত্ত্বাবধানে কাজ করবে পুলিশের টিম। নজরদারি করবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও ডিসিরা।
জোয়ার-ভাটা চলাকালীন দুর্ঘটনা এড়াতে মাইকিং করে সতর্কতা প্রচার চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, পুজো কমিটিগুলিকে মোবাইল ফোনে পাঠানো হবে অ্যালার্ট মেসেজ। জল দূষণ রোধে ঘাটের দু’পাশে বাঁশের তৈরি খাঁচা বসানো হয়েছে। ফুল, বেলপাতা ও উপচার রাখার জন্য ঘাটের পাশে বসানো হয়েছে ডাস্টবিন।
এছাড়া, নিমতলা, বাজে কদমতলা, গোয়ালিয়র ঘাট ও বিচালিঘাটে চারটি বিশেষ নৌকা রাখা হয়েছে, যাতে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর কাঠামো দ্রুত সরিয়ে ফেলা যায়। জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ডিসি কমব্যাটের নেতৃত্বে উদ্ধারকারী দল।
অন্যদিকে, বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে বাজানোয় কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। শহরের ২৩৮টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকবে পুলিশ পিকেট। কেউ নিষেধাজ্ঞা ভেঙে ডিজে বাজালে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমনকি আয়োজকদের গ্রেপ্তারও করা হতে পারে।
পুর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই ঘাট পরিদর্শন করেছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিসর্জনের আবর্জনা যাতে গঙ্গার জলের পাইপলাইনের মুখ বন্ধ না করে, সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে। নমামি গঙ্গে প্রকল্পের অধীনে পরিবেশ দফতরও যুক্ত হয়েছে এই কর্মযজ্ঞে।