Press "Enter" to skip to content

আট বছর বয়সে তিনবার মৃত্যু! বিরল অভিজ্ঞতার কথা শুনে আপনিও শিউরে উঠবেন

এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আট বছর বয়সে তিনবার ‘মৃত্যুর’ মুখোমুখি হওয়া ল্যান্ডন ২৭ বছর পর তার অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন। উত্তর ক্যারোলিনার বাসিন্দা ল্যান্ডন এবং তাঁর বাবা-মা গির্জা থেকে ফেরার পথে এক মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনায় ল্যান্ডনের বাবা কেম্প ঘটনাস্থলেই মারা যান, কিন্তু ল্যান্ডন সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরেন। তবে, তাঁর জীবন ফিরে পেতে তিনবার তাঁকে ‘মৃত্যুর’ মধ্য দিয়ে যেতে হয় বলে দাবি করেছেন তিনি।

দুর্ঘটনার বিবরণ:

পরিবারটি যখন গির্জা থেকে বাড়ি ফিরছিল, তখন একটি অ্যাম্বুলেন্স তাঁদের গাড়ির পাশে সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কায় ল্যান্ডনের বাবা কেম্প সঙ্গে সঙ্গেই প্রাণ হারান। জরুরি পরিষেবার কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং প্রথমে ল্যান্ডনের মা জুলি কেম্পকে গাড়ি থেকে উদ্ধার করেন। তাঁরা প্রথমে বুঝতেই পারেনি যে ল্যান্ডনও গাড়িতে ছিলেন।

পরে, উদ্ধারকর্মীরা যখন ল্যান্ডনের জুতোটি দেখতে পান, তখন আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করে তাঁর নিথর দেহ খুঁজে পান। ল্যান্ডনের মা জুলি জানান, “তাঁরা প্রথমে ল্যান্ডনকে দেখতে পায়নি, কারণ গাড়িতে চালকের বসার দিকটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গিয়েছিল।” তাঁকে উদ্ধার করে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই চিকিৎসকরা তিনবার তাঁকে মৃত্যুর হাত থেকে ফেরান।

আত্মার পরিণাম:

ল্যান্ডনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, তিনি দুই সপ্তাহের জন্য কোমায় ছিলেন। চেতনায় ফেরার পর তাঁর মা তাঁকে বাবার মৃত্যুর কথা জানান। কিন্তু ল্যান্ডন ইতিমধ্যেই এটা জানতেন— কারণ তাঁর কথায়, মৃত্যুর সময়ে তিনি স্বর্গে তাঁর বাবাকে দেখেছেন।

ল্যান্ডন বলেন, “আমি স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিলাম আমার বাবা আর তাঁর এক বন্ধুকে। যিনি বাবার মৃত্যুর এক মাস আগেই প্রয়াত হয়েছিলেন। এমনকি আমি আমার দুই ভাইবোনকেও দেখতে পাই, যাদের তখন জন্মই হয়নি।” তাঁর মা জুলি ওই দুর্ঘটনার আগে দু’বার গর্ভপাতের শিকার হয়েছিলেন, যা নিয়ে ল্যান্ডনকে কেউ কখনও কিছু বলেনি।

ল্যান্ডনের ভাষায়, “আমি জানতাম ওরা আমার ভাইবোন, যদিও কেউ আমায় সে কথা বলেনি। স্বর্গে থাকলে যেন নিজের আত্মীয়-স্বজনকে নিজে থেকেই চেনা যায়।”

প্রতিবার মৃত্যুর সময় তাঁর অভিজ্ঞতাগুলো আলাদা ছিল বলে জানান ল্যান্ডন। তাঁর কথায়, “এগুলো যেন সিনেমার ট্রেলার দেখার মতো— শুধুমাত্র কিছু অংশ দেখা যায়, পুরোটা নয়।”

এই অভিজ্ঞতা তাঁকে জীবনের প্রতি অন্য দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে। ল্যান্ডন বিশ্বাস করেন, মৃত্যু মানেই শেষ নয়, বরং আরও কিছু বড় কিছুর জন্য অপেক্ষা! তবে এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে যথারীতি বিতর্ক রয়েছে।

মৃতকে কি জীবিত করা সম্ভব?

এই ঘটনাটিকে অনেকেই নিকট-মৃত্যুর অভিজ্ঞতা (এনডিই) বলে থাকেন। যাঁদের এনডিই আছে, তাঁরা বিভিন্ন সংবেদনের কথা বলেন। যেমন একটি উজ্জ্বল আলো দেখা, অভাবনীয় অনুভূতি, এমনকি মৃত প্রিয়জনদের মুখোমুখি হওয়া। এই অভিজ্ঞতাগুলি সাধারণত তীব্র শারীরিক অথবা মানসিক ব্যথার পরিস্থিতিতে ঘটে, বা কোনও ব্যক্তি মৃত্যুর কাছাকাছি থাকাকালীন অবস্থায় ঘটতে পারে। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে, কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন যে এনডিই হতে পারে চরম চাপ বা যন্ত্রণার সময় মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবজনিত স্নায়বিক প্রক্রিয়া। যাইহোক, এনডিই-র সঠিক কারণ এবং প্রকৃতি একটি চলমান গবেষণা ও বিতর্কের বিষয়।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

More from বিশ্বMore posts in বিশ্ব »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *