প্রবোধ দাস, পুরুলিয়া: বিধানসভা ভোটে হেরে গিয়েও সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই কথা দিয়েছিলেন, বাঁকুড়ার মানুষের পাশে থাকবেন। তারপর থেকে তিনি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন। দলের নানান কর্মসূচিতে সামনের সারিতে থেকেছেন। কিন্তু এ বারের লোকসভা ভোটে তাঁকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরই প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর ইস্তফাপত্র।
গতকাল (রবিবার) ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে বাংলার ৪২ আসনে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। এর পরই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে নিজের ইস্তফাপত্র পাঠান সায়ন্তিকা। তাঁকে দল টিকিট দেয়নি যেমন সত্যি, তেমনই তিনি ইস্তফা পাঠিয়েছেন, সেটাও সত্যি, কিন্তু টিকিট না পাওয়ার জন্যেই যে তিনি দল ছেড়েছেন সেটা নেহাতই চর্চার বিষয়! কিন্তু এরই মধ্যে সামনে আসছে তাঁর সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য। যা দলের তরফে তাঁকে টিকিট না দেওয়া এবং তাঁর ইস্তফা দেওয়ার মধ্যে কোনো সম্পর্ক তৈরি করলেও করতে পারে।
দলীয় সূত্রে খবর, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে টিকিট পাওয়ার আশা করেছিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে কথা তিনি নিজে স্পষ্ট করে না জানালেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ব্রিগেডের জনগর্জন সভার প্রস্তুতি সভায় অংশ নিতে পুরুলিয়া এসেছিলেন সায়ন্তিকা। জেলার রঘুনাথপুর-১ ব্লকের মধুতটিতে এবং রঘুনাথপুর শহরের সভায় অভিনেত্রী তথা নেত্রী সায়ন্তিকা বলেছিলেন, “আমি এখন থেকেই বাঁকড়ি হয়ে গেছি।” রাজনৈতিক মহলের মতে, নিজেকে বাঁকুড়াবাসী হিসাবে তুলে ধরে তিনি ধারণা করেছিলেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের হয়ে প্রার্থী হবেন। কিন্তু তাঁর আশা পূরণ হল না।
ইস্তফাপত্রে সায়ন্তিকা লেখেন, ‘‘আমি গত ৩ বছর ধরে দলের সামগ্রিক রাজনৈতিক-প্রতিবাদী এবং উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। দলের সুনির্দিষ্ট আদর্শ অনুসরণ করে সমস্ত কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে আংশগ্রহণ করেছি। এই পর্যায়ে, আমি দলের সমস্ত রাজনৈতিক দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। এই সিদ্ধান্ত একান্তই ব্যক্তিগত।’’
যদিও বেলার দিকে জানা যায়, এ ধরনের কোনো ইস্তফাপত্র লেখেননি সায়ন্তিকা। আনন্দবাজার অনলাইন-এর কাছে তিনি বলেন, ‘‘প্রার্থী হতে পারি বলে আমার ইচ্ছা থাকলেও দল যে সেটাই করবে, তার তো কোনও মানে নেই। তবে এটা ঠিক যে প্রার্থিতালিকায় নাম না থাকায় প্রথমে কিছুটা অভিমান হয়েছিল। তবে দলের বিরুদ্ধে, দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। আমি কোনও ভাবেই কোনও পদ থেকে ইস্তফা দিইনি। কাউকে এ নিয়ে কোনও কথাও বলিনি।’’
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়া আসনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তীকে। বাঁকুড়ার পর্যবেক্ষক করে রাখা হয়েছে সায়ন্তিকাকে।
আরও পড়ুন: লোকসভায় টিকিট দেয়নি তৃণমূল, দলের সমস্ত পদ ছাড়লেন সায়ন্তিকা
Be First to Comment