অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: আসানসোল জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। সেই হাসপাতালে প্রায় গত দুমাস ধরে হচ্ছে না আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা বা ইউএসজি পরীক্ষা। এই পরীক্ষা করা ও রিপোর্ট দেওয়ার জন্য একজন মাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা রেডিওলজিস্ট ছিলেন, তিনি এখন ছুটিতে । কবে সেই চিকিৎসক আসবেন বা বিকল্প কাউকে এনে কবে থেকে আবার এই পরীক্ষা চালু হবে, তা জানা যায়নি।
তবে পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর কাছ থেকে এই ব্যাপারটি জানার পরে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে।
এদিকে ইউএসজি না হওয়ার ফলে চরম দুর্ভোগ ও সমস্যায় পড়েছেন আসানসোল শহর, শিল্পাঞ্চল সহ দূরদূরান্ত থেকে আসা কয়েকশো রোগী। বিশেষ করে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষেরা এবং প্রসূতিরা যারা নিত্যদিন চিকিৎসা করাতে আসানসোল জেলা হাসপাতালে আসেন।

চিকিৎসকের সুচিকিৎসার প্রয়োজনে ইউএসজি করাতে হয়। এখন তা না হওয়ায় তারা চরম সমস্যায় পড়েছেন বহু রোগী।
সাধারণত, রাজ্যের অন্য সরকারি হাসপাতালের মতো, আসানসোল জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ইউএসজি করাতে গেলে কোনও টাকা লাগেনা ।চিকিৎসকের পরামর্শ থাকলেই যে কোন রোগী বিনামূল্যে নির্দিষ্ট বিভাগে গিয়ে ইউএসজি পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন।
জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গড়ে প্রতি দিন ৬৫ থেকে ৭৫ জন রোগীর ইউএসজি হতো। যেসব রোগীদের আর্থিক ক্ষমতা আছে তারা বাইরে থেকে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে আলট্রাসোনোগ্রাফি বা ইউএসজি করে নিয়ে আসেছেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা করাচ্ছেন। যাদের হাজার হাজার টাকা খরচ করার সেই ক্ষমতা নেই তারা ইউএসজি না করিয়েই সাধারণ ওষুধ খাচ্ছেন।
কেন এই সমস্যা তৈরি হয়েছে আসানসোল জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ? এই প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, ইউএসজি করার জন্য গত কয়েক মাস ধরে জেলা হাসপাতালে একজনই চিকিৎসক ছিলেন। ওই চিকিৎসক প্রথমে অল্প কিছুদিনের জন্য ছুটি নেন। পরে কাজে যোগ না দিয়ে অনলাইনে ছুটি বাড়িয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে ওই বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় ইউএসজি করা যাচ্ছে না। সিনিয়র সব চিকিৎসক আসতে আসতে অবসর নেওয়ায় শেষ কয়েক মাস ধরে একজনই মাত্র চিকিৎসক এই কাজ করছিলেন। এমন দিনও আছে যেদিন ১০০ থেকে ১২০ জন রোগীর ইউএসজি করা হতো। এই বিষয়টা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচকে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান বলেন, গত কয়েক মাস ধরে আসানসোল জেলা হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট বিভাগে একজনই চিকিৎসক ছিলেন। যিনি বর্তমানে দীর্ঘদিন ছুটিতে আছেন বলে সুপার আমায় বলেছেন। সেই কারণেই একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমি গোটা বিষয়টা ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দপ্তরকে জানিয়েছি।
তাই আশা করছি শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়ে জেলা হাসপাতালে এই পরীক্ষা চালু হবে।
তবে জানা গেছে, শুধুমাত্র এই বিভাগেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নেই। কিছু বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক আবার চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার আবেদন করেছেন। অনেকে আবার চাকরি ছাড়ার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করছেন।




Be First to Comment