Press "Enter" to skip to content

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে মর্মান্তিক ঘটনা, মাইনিং কলেজের পরিত্যক্ত ভবনের দেওয়াল চাপা পড়ে দুই যুবকের মৃত্যু

রানিগঞ্জ : দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে শনিবার দুপুরে রানিগঞ্জ শহরে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল । মাইনিং কলেজের পরিত্যক্ত ভবনের দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল দুই যুবকের।

ঘটনাটি ঘটেছে রানিগঞ্জ থানার বল্লভপুর ফাঁড়ির সাহেবগঞ্জ মোড় সংলগ্ন এলাকায়। মৃতরা হল রানিগঞ্জ থানার কাঠগাদার সীতারাম বাউরি (২০) এবং সাহেবগঞ্জের রাজীব দাস (১৯)। এই ঘটনায় রানিগঞ্জ শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই ঘটনাটি নিয়ে এলাকার বাসিন্দা ও এগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের দুরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে।

ঠিক কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে রানিগঞ্জ থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি এই ঘটনা নিয়ে এলাকার বাসিন্দারা যথেষ্টই ক্ষুব্ধ। তাদের দাবি, কার গাফিলতির কারনে ভবনটি ভাঙা হয়নি, তা তদন্ত করে দেখতে হবে।

জানা গেছে, রানিগঞ্জ থানার সাহেবগঞ্জ মোড় সংলগ্ন এলাকা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজের জন্য বাড়ি ভাঙ্গার কাজ চলছে। বেশ কিছু বাড়ি ভাঙা হয়েছে। আর কিছু বাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তেমনই একটি মাইনিং কলেজ ভবন। শনিবার দুপুর দুটো নাগাদ সেই পরিত্যক্ত ভবনের একটি অংশের দেওয়াল ভেঙে পড়ে। তার তলায় চাপা পড়েছে বেশ কয়েকজন, এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রানিগঞ্জ থানার বল্লভপুর ফাঁড়ির পুলিশ এবং উদ্ধারকারী দল। নিয়ে আসা হয় জেসিবি মেশিন। সেই জেসিবি মেশিন দিয়ে বাড়ির ভাঙ্গাচোরা অংশ সরানোর কাজ শুরু হয়। ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় সেই ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ইট বালির ভেতর থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রাজীব দাস ও সীতারাম বাউরিকে।

সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সেই ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আর কেউ চাপা পড়ে আছে কি না, তা দেখার জন্য জেসিবি মেশিন দিয়ে সন্ধ্যে পর্যন্ত ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু আর কাউকে সেখান থেকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, রানিগঞ্জের এই এলাকায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই বাইপাস রোড নির্মাণের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। তারই মধ্যে রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য সেখানের বাড়িঘর সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেই অংশেরই একটি বাড়ি এইভাবে ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

এলাকার বাসিন্দা রিসভ হেলা বলেন, ওই যুবকেরা ওই পরিত্যক্ত বাড়ির ভাঙা অংশে লোহার রড ও অন্য সামগ্রী বার করতে গিয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, সেই সময় হয়তো ভেঙে পড়ে ভবনের একাংশের দেওয়াল। তার তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় দুজনের।

এই প্রসঙ্গে এগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সন্দীপ গরাই বলেন, “ওই দুই যুবক ওই বাড়ির কাছে গিয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। তারপর বাড়ির দেওয়ালের তলায় চাপা পড়ে যায় দুজন। পরে তাদের মৃত্যু হয়”। তিনি আরও বলেন, “কেন ভবনটি এইরকম ভাবে রেখে দেওয়া হল, বুঝতে পারছি না। আমি গোটা বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাব”।

অন্যদিকে, এই ঘটনা নিয়ে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, দেওয়াল চাপা পড়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। রবিবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে দুই যুবকের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *