রানিগঞ্জ : পুরোহিতের বাড়ির কালী মন্দিরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছিল। দুদিনের মধ্যে চোরকে ধরে সেই চুরির কিনারা করলো আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের রানিগঞ্জ থানার পুলিশ।
রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ মন্দির থেকে চুরি যাওয়া টাকা ও কালী মূর্তির গয়না চোরের লুকিয়ে রাখা জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ধৃত চোরের নাম বিকাশ শর্মা ওরফে টেটিয়া। তার বাড়ি রানিগঞ্জ থানার ইস্ট কলেজ পাড়া এলাকায়। ওই একই এলাকার বাসিন্দা হলেন পেশায় পুরোহিত বিশ্বনাথ বটব্যাল।

এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার রানিগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ বিকাশ দত্ত বলেন, রানিগঞ্জের ইস্ট কলেজ পাড়ার বাসিন্দা হলেন পেশায় পুরোহিত বিশ্বনাথ বটব্যাল। তার বাড়ির পাশেই রয়েছে একটি কালি মন্দির। গত ৬ মার্চ একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে পুরোহিতের কাজ করতে বাঁকুড়ায় যান বিশ্বনাথ বটব্যাল। পরের দিন ৭ মার্চ বাড়ি ফিরে এসে তিনি দেখেন, কালী মন্দিরে চুরি হয়েছে। কালি মূর্তির মাথায় রুপোর মুকুট সহ অন্যান্য গয়নার পাশাপাশি মন্দিরের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা চোরে চুরি করে নিয়ে গেছে। সেদিনই তিনি রানিগঞ্জ থানায় গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
ইন্সপেক্টর ইনচার্জ আরো বলেন, তদন্তে পুলিশ মন্দির এলাকায় যায়। আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নেওয়া হয়। সোর্স ব্যবহার করে জানার চেষ্টা করা হয় যে, ইষ্ট কলেজ পাড়ার আশপাশের এলাকায় কোন কোন চোর বা দূষ্কৃতিরা আছে। সেই মতো ওই এলাকারই বাসিন্দা বিকাশ শর্মা ও টেটিয়ার কথা আমরা জানতে পারি। এরপর একপ্রকার নিশ্চিত হওয়া যায়, এই চুরির ঘটনার সঙ্গে সে জড়িত থাকতে পারে। ৭ মার্চ রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জেরায় কালি মন্দিরে সে চুরির কথা স্বীকার করে। ৮ মার্চ ধৃতকে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হয়। বিচারক তাকে চারদিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।
এরপর ধৃতকে আবারও জেরা করায় সে জানায় কোথায় সে চুরি করা জিনিস লুকিয়ে রেখেছে। সেই মতো আমরা সোমবার রানিগঞ্জের খয়েরবাঁধের জঙ্গল থেকে সবকিছু উদ্ধার করি। ধৃত সব গয়না ও ৪৬ হাজার টাকা একটা প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ে এই জঙ্গলে লুকিয়ে রেখেছিল।
পুরোহিত পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে, তার নগদ ৭০ হাজার টাকা চুরি গেছে। কিন্তু ধৃত আমাদেরকে বলেছে, সে মন্দির থেকে ৪৮ হাজার টাকা চুরি করেছিল। সে ২ হাজার টাকা খরচ করেছে। বাকি টাকা লুকিয়ে রেখেছিল।
ইন্সপেক্টর ইনচার্জ বিকাশ দত্ত বলেন, ধৃত চোর একই পাড়ার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে সে পুরোহিতের বাড়ি ও মন্দিরে যেত। তাই মোটামুটি সে জানতো মন্দিরে কি কি আছে। পরে সে জেনেছিল ৬ মার্চ পুরোহিত বাড়িতে থাকবে না। তাই সেদিন সে মন্দিরে চুরি করে। পরের দিনই পুলিশ তাকে ধরে ফেলায় সে বেশি টাকা খরচ করতে ও গয়না বিক্রি করতে পারেনি। চারদিন রিমান্ড শেষে বুধবার ধৃতকে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করা হবে।




Be First to Comment