Press "Enter" to skip to content

ভোট আসে ভোট যায়! সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলর হন, কিন্তু দূষণ নিয়ন্ত্রণে কোনো ‘রা’ কাড়েন না, দুর্গাপুরে দূষণ নিয়ন্ত্রণে নেই কড়া পদক্ষেপ

অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: এত দিন শীতকাল ছিল। ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ থাকত। এ বার গরম পড়তে শুরু করেছে। দুর্গাপুরের দূষণ নিয়ে অভিযোগ তুলছেন অধিকাংশ বাসিন্দারা ।

তাঁদের প্রশ্ন, ভোট এলে নেতাদের ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়, কিন্তু দূষণ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কেন ? বিধায়ক, সাংসদ, কাউন্সিলররা কি অন্ধ না ভিন গ্রহের বাসিন্দা ?

মাঝে মধ্যে দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। একে ওপরের দিকে আঙুল তোলেন । কিন্তু দূষণ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই থেকে যায় । দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের একটাই বাণী, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

দুর্গাপুর শহরের রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর হোক বা সগড়ভাঙা হোক, সর্বত্র দূষণের জেরে চরম সমস্যায় ভোগেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের সবারই অভিযোগ, দূষণের জেরে বাড়ির ছাদ, বাড়ির উঠোন থেকে বারান্দা, কালো আস্তরণ পড়ছে। সমস্ত গাছের সবুজ পাতা দূষণে কালো হয়ে যাচ্ছে । পুকুরের জলে দূষণের কালো সর পড়ছে। আট থেকে আশি সবারই শ্বাস নিতে সমস্যা হয়।

বাসিন্দারা জানান, শীতে দরজা-জানলা বন্ধ থাকায় কিছুটা নিশ্চিন্তে রাতে ঘুমনো যেত। কিন্তু গরমে সে উপায় নেই। ঘরের মধ্যে প্রবেশ করছে দূষণের কালি ।

চিকিৎসকেরা জানান, দুর্গাপুরে দূষণের জেরে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমতে থাকছে । মানুষের মধ্যে ফুসফুসে সংক্রমণ হচ্ছে । হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিচ্ছে । দীর্ঘদিন এমনটা চললে ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ (সিওপিডি) হতে পারে।

দুর্গাপুরে এই ভয়াবহ দূষণে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের সমস্যা জটিলতর হয়ে যাচ্ছে । দূষণে জর্জরিত এলাকাবাসীরা বলেন, দূষণ নিয়েই আমরা বহু বছর না মরে, রোগাক্ৰান্ত হয়ে বেঁচে আছি।

তাঁদের অভিযোগ, বাড়ি, ঘর,ওঠােন, বাড়ির চাদ সব দূষণের ছাইয়ে ঢেকে যাচ্ছে। এমনকী রাস্তায় সাইকেল-বাইক নিয়ে চলতে পারেন না । এখানকার বিভিন্ন কারখানা লাগাতার দূষণ ছড়াচ্ছে। তার ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের ।

কিন্তু দূষণ পর্ষদ সব দেখেও নীরব । দূষণ নিয়ন্ত্রণে লাগাতার অভিযান জরুরি। দূষণ নিয়ন্ত্রন পর্ষদ তা করে না ।
তাঁদের আরও অভিযোগ, বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে বেশ কিছু কারখানায় দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র ব্যবহার করে না।

সবকিছু জানালেও পর্ষদের দুর্গাপুর কার্যালয়ের এক আধিকারিক চুপচাপ থাকেন । তিনি শুধু বলেন, নিয়মিত অনলাইনে মনিটরিং করা হয়। নিয়মিত অভিযানও হয়।

পাশাপাশি, দুর্গাপুরের পুর-প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, যেসব কারখানা দূষণ ছড়ায়, সেসব কারখানা কর্তৃপক্ষকে মাঝেমধ্যে বলা হয় । আলোচনা করা হয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ।

বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শাসক দলের নেতাদের তোলাবাজির জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয় না। কারখানা মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে শাসক দলের নেতাদের । এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী শাসক দল । দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে । সরকার পরিবর্তন হলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *