Press "Enter" to skip to content

বহু প্রাচীন জাগ্রত জয়নগরের মা ধন্বন্তরি কালীর পুজোতে এখনও রয়েছে ছাগ বলির রীতি

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : ১২ ভুঁইঞার এক ভুঁইঞা ছিলেন রাজা প্রতাপাদিত্য। রাজার মৃত্যুর পর শংকর তাঁর বংশকে রক্ষা করতে সবাইকে দক্ষিণ ‘যশোহরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। আজকে যেখানে জয়নগর সেই অঞ্চল ছিল দক্ষিণ যশোহরের মধ্যে।

গোটা এলাকা জুড়ে জঙ্গল। বাঘ সহ অন্যান্য হিংস্র জন্তুতে পরিপূর্ণ। জনশ্রুতি, সেখানে তান্ত্রিক ভৈরবানন্দ কঠোর তপস্যা করছিলেন। বর্তমানে যেখানে মন্দির সেখানে ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। চক্রবর্তী বংশের পূর্বপুরুষ রাজন্যনাথ চক্রবর্তী সাধক ভৈরবানন্দের সন্ধান পেয়ে নেতড়া এলাকা থেকে চলে এসেছিলেন এই অঞ্চলে। দু’জনের সাক্ষাৎ হয়।

ভৈরবানন্দ তাঁকে বলেন, আদি গঙ্গায় মা রয়েছে।’ তারপর আদি গঙ্গা থেকে কালী ঠাকুরের কষ্টি পাথরে তৈরি মূর্তি তুলে নিয়ে এসে পর্ণকুটিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভৈরবানন্দ রাজন্যনাথকে পুজোর দায়িত্ব দিয়ে অন্যত্র চলে যান। তারপর থেকে বংশ পরম্পরায় চক্রবর্তী পরিবার জয়নগরের ধন্বন্তরি কালী মন্দিরে পুজো করে আসছেন।

কালে কালে মন্দিরের আকার বৃদ্ধি পায়। কালীর মূর্তিও নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কালীকে আরাধ্য দেবী বলে সাধনা করেছিলেন সাধক ভৈরবানন্দ। তাই মায়ের নাম ধন্বন্তরি। জয়নগর মজিলপুর পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে এই ধন্বন্তরি কালী মন্দির।

চক্রবর্তী পরিবারের সেবাইত কমিটির এক সদস্য তথা পুরোহিত জানান, কালী পুজোয় নিষ্ঠা ভরে মায়ের পুজো হয়। ঐতিহ্য মেনে রাতে ছাগ বলি হয় এখনও। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুজো চলে। মাকে মাংস ভোগ দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু সে মাংস নিরামিশ। পেঁয়াজ ও রসুন ছাড়া করা হয় রান্না।

এছাড়াও মাকে মাছের পদ ভোগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি খিচুড়ি, পোলাও, পায়েস ভোগ দেওয়ার রীতি আছে। পুজোর সময় কালীকে নতুন শাড়ি, সোনার গয়নায় সাজিয়ে তোলা হয়। মা খুবই জাগ্রত। পুজো দেখতে ভিড় জমে যায়।

এছাড়া মায়ের আবির্ভাব তিথি বৈশাখ মাসেও পক্ষকাল ব্যাপী মেলা হয় এখানে। মাকে ষোড়শী, জগদ্ধাত্রী, মালিনী সহ নানা রূপে সাজানো হয়। আর এই কালী মায়ের দর্শন করতে আসতে হবে আপনাকে জয়নগর মজিলপুরে। স্টেশন থেকে ৫ মিনিট হাঁটা পথে আপনি চলে আসতে পারেন এখানে।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *