অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্ডাল থানার ওসি হওয়ার অর্ডার পেয়েছিলেন বারাবনি থানার বর্তমান ওসি মনোরঞ্জন মণ্ডল। কিন্তু সেই নির্দেশের তিন দিনের মাথায় কর্তব্যে গাফিলতির জন্য বৃহস্পতিবার রাতে সাসপেন্ড হন এসআই মনোরঞ্জন মণ্ডল। তাই তাঁর জায়গায় এবার সেই অন্ডাল থানার ওসির দায়িত্ব পেলেন জামুড়িয়া থানার শ্রীপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মেঘনাদ মণ্ডল।
শুক্রবার সকালে এই মর্মে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনার বা এডিপিসির তরফে পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরীর সাক্ষরিত একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাতে আরো বলা হয়েছে, আসানসোল দক্ষিণ থানার এসআই মেহেরাজ আনসারিকে শ্রীপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ করা হচ্ছে। নতুন এই নির্দেশিকায় এও বলা হয়েছে, বারাবনি থানার ওসি মনোরঞ্জন মন্ডলকে অন্ডাল থানার ওসি করার যে অর্ডার গত ১৯ নভেম্বর বেরিয়েছিলো, তা আপাতত বাতিল করা হল । মনোরঞ্জন মণ্ডলকে আসানসোল পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত, গত ৯ জুন দিনেদুপুরে রানিগঞ্জ শহরে একটি বড় সোনার দোকানে বেশ কয়েকজন ডাকাত দল হানা দেয়। সেই সময় ওই সোনার দোকানের সামনে রাস্তার উল্টোদিকে একটা হার্ডওয়ারের দোকানে সিভিল ড্রেস বা সাদা পোষাকে ছিলেন শ্রীপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মেঘনাদ মন্ডল। তার সঙ্গে ছিল নিজের সার্ভিস রিভলবার। ডাকাত দলের বেশ কয়েকজন সোনার দোকানের ভেতরে লুঠপাট করছিল। দুজন ডাকাত কেউ আসছে কি না, তা দেখতে বাইরে ঘোরাঘুরি করছিল। সোনার দোকানে ডাকাতির কথা কোনও ভাবে মেঘনাদ মণ্ডল জানতে পারেন । সঙ্গে সঙ্গে তিনি একাই নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সার্ভিস রিভলবার হাতে নিয়ে সোনার দোকানের কাছে একটি গাছের আড়াল থেকে ডাকাত দলের সঙ্গে লড়াই করতে শুরু করেন।
ডাকাত দল তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। বিন্দু মাত্র ভয় না পেয়ে মেঘনাদবাবুও পাল্টা ডাকাতদলকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকেন। তার ছোঁড়া একটি গুলি এক ডাকাতের কোমরে লাগে। তাতে সে দোকানের সামনে লুঠিয়ে পড়ে।
তার মধ্যে ডাকাতরা ওই দোকান থেকে প্রায় দু কোটি টাকা মূল্যের সোনা এবং হিরের গয়না লুঠ করেছিল। কিন্তু দলের এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হওয়ায় খানিকটা রণে ভঙ্গ দিয়ে বাকি ডাকাতরা লুঠ করা সামগ্রীর অনেকটাই দোকানের সামনে ফেলে দিয়ে পালায়। জখম ডাকাতকে তারা সঙ্গে করে নিয়ে পালায়। কিন্তু জখম হওয়া ডাকাত ও পরে আসানসোল থেকে ছিনতাই করা একটা চারচাকা গাড়ির সূত্র ধরে আসানসোল পুরনিগমের পুলিশ বিহার সহ অন্য রাজ্য থেকে এক লিঙ্ক ম্যান সহ প্রায় সব ডাকাতকে ধরে ফেলে।
কিন্তু মেঘনাদ মন্ডলের লড়াইকে গোটা রাজ্যবাসী কুর্নিশ জানায়। রাজ্য পুলিশের সোশাল মিডিয়া পেজে গোটা বিষয়টি তুলে ধরে প্রচার করা হয়। মনে করা হচ্ছে, ৫ মাস পরে হলেও, নিজের সেই লড়াইয়ের পুরষ্কার হিসেবে অন্ডাল থানার ওসি করা হল মেঘনাদ মণ্ডলকে ।
Be First to Comment