অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা : কুলটির ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড-এর নিয়ামতপুরের রেশন ডিলার রোহিত ভালোটিয়ার উপর চারদিন আগে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার প্রতিবাদে কুলটি পুর এলাকার ৪৭ জন রেশন ডিলার বুধবার থেকে ৫ দিনের জন্য ধর্মঘট শুরু করলেন।
ধর্মঘটে নামা রেশন ডিলারদের দাবি, ওই ওয়ার্ডের তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর জাকির হোসেনের ভাই সাগির হোসেনের নেতৃত্বে চার দিন আগে গত শনিবার রেশন ডিলার রোহিত ভালোটিয়াকে হেনস্থা ও মারধর করা হয়েছে। তার প্রতিবাদে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবিতে, বুধবার থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট রবিবার পর্যন্ত চলবে।
এদিকে, রেশন ডিলারকে মারধরের ভিডিও ভাইরালের পরে এবার বুধবার আরেকটি অডিও ভাইরাল হয়। সেই অডিওতে শোনা যাচ্ছে, রেশন ডিলারের সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরের টাকা চাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে ( এই দুটি ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা হয়নি)। ভাইরাল হওয়া এই অডিওর কন্ঠ যে রেশন ডিলার রোহিত ভালোটিয়ার সে কথা তিনি এদিন স্বীকার করেন। যদিও ভাইরাল হওয়া অডিওর উল্টো দিকের কন্ঠ স্বরটি কাউন্সিলর বা তার ভাইয়ের নয় বলে দুজনেই দাবি করেছেন।

জাকির হোসেনের ভাই সাগির হোসেন মারধোরের কথাও অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় গ্রাহকদের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়ে থাকতে পারে ডিলারের। এই বিষয়ে আমার বিশেষ কিছু জানা নেই।
রেশন ডিলার রোহিত ভালোটিয়া বলেন, গত শনিবার এক গ্রাহক সহ কয়েকজন আমার রেশন দোকানে এসে বলেন, তারা বাড়িতে গিয়ে দেখেছেন তাদের রেশনে দেওয়া জিনিসের ওজন কম আছে। যা সম্পূর্ণ অবাস্তব। এখন জিনিসে প্রকৃত ওজন যতক্ষণ না ঠিক হয় ততক্ষণ গ্রাহকের স্লিপ বেরোবে না। এরপরেই আমার উপরে হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। যা করা হয়েছে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভাই সাগির হোসেনের নেতৃত্বে।
রোহিত আরো বলেন, রেশন ডিলার হিসেবে মাত্র ২৫ হাজার টাকা আমরা কমিশন পাই। তার মধ্যে আমার পরিবারে শারীরিক ভাবে অক্ষম এক সন্তান আছে। খাদ্য দপ্তর বা প্রশাসন তদন্ত করে যদি কোন অন্যায় পান তাহলে আমাকে সাসপেন্ড করুক। কিন্তু মারধোর করা হবে কেন? এর আগেও বারবার আমাকে হেনস্থা করা হয়েছে। এমনকি এর আগে বেশ কয়েকবার আমার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে।
কুলটি এলাকার রেশন ডিলার সংগঠনের সভাপতি শ্রবণ কুমার গোয়েল বলেন, কোন রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কোনও অভিযোগ থাকতেই পারে। তাহলে প্রশাসনিকভাবে সেই অভিযোগ জানানোর জায়গা আছে। তা না করে তাকে মারধর করা আক্রমণ করার আমরা প্রতিবাদ করেছি। এই বিষয়টি ইতিমধ্যেই আমরা সংগঠনের তরফে ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলার, আসানসোলের মেয়র, কুলটি থানা সব জায়গায় লিখিতভাবে জানিয়েছি ।
এই ঘটনার প্রতিবাদে কুলটির ৪৭ জন রেশন ডিলার বুধবার থেকে ধর্মঘট শুরু করেছেন । যদি প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আগামী দিনে আমরা রেশনের কোন জিনিস তুলবো না। এছাড়াও আসানসোল মহকুমার সংগঠনের নেতৃত্বের সাথে কথা বলে মহকুমা জুড়ে আন্দোলনের ভাবনা চিন্তা করা হবে। আমাদের উদ্দেশ্য প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দেওয়া।
এদিকে খাদ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘটনা নিয়ে নির্দিষ্ট করে অভিযোগ দায়ের করা হলে, আইন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




Be First to Comment