অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা : আসানসোলের পোলো গ্রাউন্ডে রাজ্য হস্তশিল্প মেলায় বুধবার দুপুরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সৌভাগ্যবশত, সেই আগুনের কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে সবমিলিয়ে ১০টি স্টল সেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই কারণে অনেক হস্তশিল্প শিল্পীকে কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে।
কিন্তু মনে হচ্ছে মেলা প্রাঙ্গণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থেকে কোনও শিক্ষা নেওয়া হয়নি। ঘটনার একদিন পরে বৃহস্পতিবার মেলা চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে স্টোভ জ্বালিয়ে খাবার রান্না করা হচ্ছে। কিছু লোক সিগারেট খাচ্ছে। এমনকি মেলা প্রাঙ্গণে মদের বোতলও দেখতে পাওয়া গেছে।
এই প্রসঙ্গে মেলা কার্যালয় বা অফিসে থাকা এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি চুপ করে থাকেন। তিনি কেবল বলেন, এই বিষয়ে যা কিছু প্রতিক্রিয়া দেওয়ার তা মেলা কমিটির জেনারেল ম্যানেজার দেবেন। তিনি দুর্গাপুরে থাকেন।

এদিকে, মেলা প্রাঙ্গণে স্টল করা বেশ কিছু লোকদের সাথে আমরা কথা বললে তারা স্বীকার করেন, মেলা প্রাঙ্গণে খাবার রান্না করেন ও সিগারেটও খান। তাদের কথায়, এটা করা উচিত নয়। যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, মদের বোতল মেলা চত্বরে কি করে এলো? তারা এর সরাসরি কোনও উত্তর দেননি।
এখন প্রশ্ন উঠছে, বুধবার এই মেলা প্রাঙ্গণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল। ভাগ্যক্রমে, আগুন ভয়াবহ রূপ নেয়নি। যে পোলো গ্রাউন্ড এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে, এর আশেপাশে মানুষের বাড়ি, বড় বড় সরকারি অফিস এবং শপিং মল রয়েছে। তবুও, মেলা প্রাঙ্গণে যে ধরণের অসাবধানতা এবং নিরাপত্তা বিধির প্রতি অবহেলা দেখা যাচ্ছে, তা কি নতুন কোনও বিপদকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে না?
তবে, এদিন মেলা চত্বরে দেখা মিলল একটি দমকলের ইঞ্জিন ও একটি এ্যাম্বুলেন্সের। অথচ যার কোনটিরও দেখা মেলেনি বুধবার দুপুরে আগুন লাগার সময়।
এদিকে, এদিন মেলা চত্বর পরিদর্শনে আসেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, আসানসোলে হস্তশিল্প মেলায় বুধবার অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তারপর সেখানে ধরা পড়ে প্রশাসনিক চরম অব্যবস্থা। যেখানে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র গুলি খালি দেওয়া হয়েছিো। শিল্পীদের কাছে প্রশাসন, ফায়ার ব্রিগেড চিকিৎসা বিভাগ, অ্যাম্বুলেন্সে, পানীয় জল সহ অতি প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কোন ফোন নম্বর বা মেলা কমিটির দায়িত্বে থাকা লোকজনের ফোন নম্বর বুধবার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। বুধবার আগুন লাগার ঘটনা যখন ঘটে তার প্রায় এক ঘণ্টা পর ফায়ার ব্রিগেডের দেখা পাওয়া যায়। তার মধ্যে ৭ টি স্টল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আরো ১৩ টির বেশি স্টল প্রচন্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরো বলেন, এদিন যখন এই মেলা পর্যবেক্ষণ করতে আসি তখন শিল্পীরা তাদের ওপর ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনার বিষয় তুলে ধরেন। পরে আমি এখানে থাকা আধিকারিকদের সাথে কথা বলি। রাজ্য সরকারের কাছে দাবী রাখছি যে, এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের ন্যূনতম ২ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া ব্যবস্থা করা হোক. যাতে এই ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে। আবার যাতে আসানসোলে আর এইরকম অঘটন না ঘটে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিতে হবে।




Be First to Comment