বিতর্কে বার্নপুরের রাঙ্গাপাড়ায় ধরমপুর ফ্রি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। নিজস্ব ছবি
অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, বার্নপুর: আসানসোল পুরনিগমের ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বার্নপুরের রাঙ্গাপাড়ায় ধরমপুর ফ্রি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ড. অর্চনা কুমারীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সরব হলেন স্কুলেরই বেশিরভাগ শিক্ষক ও শিক্ষিকারা ।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষিকারা প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার, জাতি নিয়ে কুরুচিকর শব্দ ব্যবহার করে অপমান করা এবং মিড-ডে মিল থেকে খাবার চুরি করা সহ দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। শুধু তাই নয়, স্কুল পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের খাবার চুরি করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যা নিয়েও শোরগোল পড়েছে। তবে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা হয়নি।
জানা গেছে, বার্নপুরের এই স্কুলের সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুল পরিদর্শক বা এসআইয়ের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। এর ভিত্তিতে সুজিত চট্টোপাধ্যায় সোমবার এসআই অফিস থেকে সেইসব অভিযোগের তদন্ত করতে স্কুলে পৌঁছান। তিনি অভিযোগকারী সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে অভিযোগের তথ্য নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। পরে তিনি বলেন, এসআই অফিসের তরফে সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অপরদিকে, স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা সরিতা কুমারী অভিযোগ করেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি বিদ্যালয়ের গেট বন্ধ থাকার অভিযোগ করতে যান প্রধান শিক্ষিকা অর্চনা কুমারীর কাছে। সেই সময় প্রধান শিক্ষিকা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁর বিরুদ্ধে জাতপাত তুলে কথা বলা এবং মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন সহকারী শিক্ষিকা। তাকে ঠেলে ফেলে দেওয়ারও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ যে, স্কুল চলাকালীন জরুরি পরিস্থিতিতেও প্রধান শিক্ষিকা তাকে ফোনে কথা বলতে দেন না।
একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষিকা তার পদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে হেনস্থা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে ওই স্কুলের আরও সাত শিক্ষকের অভিযোগ। একই ভাবে, প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন করে বহু শিশুকে স্কুলে ভর্তি না করে পড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এক শিক্ষক শম্ভু নাগ। তাঁর আরও অভিযোগ, সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষিকার সঙ্গে প্রধান শিক্ষিকার মধ্যে ভালো সম্পর্ক নেই।
এই প্রসঙ্গে সহকারী শিক্ষক মঙ্গল সিং বলেন, প্রধান শিক্ষিকা কোনো সহকারী শিক্ষকের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলেন না। এছাড়াও প্রধান শিক্ষিকা সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে বিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনো কাজ নিয়ে আলোচনা করেন না।
এই সংক্রান্ত খবর পেয়ে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা স্কুলে এসে শিক্ষিক ও শিক্ষিকাদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার জন্য পৌঁছান। সে সময় প্রধান শিক্ষিকা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তিনি নিজের অবস্থানে অনঢ় থেকে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদেরকে স্কুল থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এইসব অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা অর্চনা কুমারীকে বারবার জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এই ব্যাপারে তার কিছু বলার নেই।
তবে পাল্টা প্রধান শিক্ষিকা বলেন, সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষিকদেরকে নিয়ম মেনে পড়ানোর দিকে মনোযোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে এইসব অভিযোগ করা হচ্ছে ।
অন্য দিকে এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর কাহাকশা রিয়াজের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনিও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগের কথা বলেন। পাশাপাশি এইসব অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।
Be First to Comment