রানিগঞ্জ :ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষীদের গ্রামের মাঝে আটকে রেখে খোলামুখ কয়লাখনির বিস্ফোরণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুরে রানিগঞ্জের এগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণকুঁড়ি মুচিপাড়া এলাকায়।
জানা গেছে, এদিন দুপুরে অন্য দিনের মতো রানিগঞ্জের নারায়ণকুঁড়ির মুচিপাড়ার বাড়ির সদস্যরা দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। বেশ কয়েকজন বাড়ি মধ্যে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তখনই পাশের কয়লাখনিতে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণের জেরে তিনটি বড় আকারের পাথর এসে আছড়ে পড়ে বাড়ির সামনে এবং কাছাকাছি থাকা ইটভাটায়।
এই ঘটনার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এলাকার বাসিন্দারা। এর আগে প্রায় তিন, চারবার এলাকা থেকে কয়লাখনিতে বিস্ফোরণের বিরোধীতা করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এর আগে বেশ কয়েকবারের বিস্ফোরণে এলাকার বাড়িঘর ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আহত হয় অনেকে। তারপর দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকে খোলামুখ বা ওসিপি।

যদিও পরবর্তী সময়ে গ্রামবাসীদের ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করা হয়। তাতে নিয়ন্ত্রণে রেখে বিস্ফোরণ করা হবে বলে, কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
এবার আবারও জোরালো বিস্ফোরণে পাথর ছিটকে পড়ায় আতঙ্ক অনেকটাই বেড়ে যায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, যেকোন সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এ নিয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে, তাদেরকে সেই এলাকা থেকে পুনর্বাসন দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে কয়লাখনিতে কয়লা তুলুক ইসিএল, বলেই দাবি করেন তারা।
এদিন দুপুর ছাড়িয়ে বিকেল হয়ে পড়লেও ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষীদেরকে গ্রামে আটকে রাখা হয়। তাদেরকে গ্রামবাসীরা পাউরুটি, মিষ্টি, বিস্কুট ও জল খাইয়ে বসিয়ে রেখে তাদের বিক্ষোভ আন্দোলন চালিয়ে যান। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ইসিএলের নিরাপত্তা রক্ষীরা বিস্ফোরণের পর দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। তা দেখে গ্রামবাসীরা ইসিএলের ওই দুজন নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রামেরই এক প্রান্তে আটকে রাখেন। গ্রামবাসীরা এইভাবে কয়লাখনিতে বিস্ফোরণের প্রতিকার চেয়ে বিক্ষোভ দেখান।
গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় রানিগঞ্জ থানার বল্লভপুর ফাঁড়ির পুলিশ। তারা বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এই বিস্ফোরণ বন্ধ না হলে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেই দাবি করেন। গ্রামবাসীদের অনেকেই দাবি করেন, সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে খোলা মুখ কয়লা খনি বন্ধ করে দিক ইসিএল।
এই বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দাবী করে বলেছেন , বিষয়টিকে নিয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষ সঙ্গে বৈঠক করে এর সমাধান সূত্র বার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ইসিএলের তরফে বলা হয়েছে, গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।




Be First to Comment