Press "Enter" to skip to content

তিন মাস ধরে মিলছে না রেশন, কাটা হচ্ছে স্লিপ, জামুড়িয়ার সাধারণ মানুষের রাস্তা অবরোধ, বিক্ষোভে উত্তেজনা

জামুড়িয়া : তিন মাস ধরে রেশন মিলছে না। এই অভিযোগকে সামনে রেখে শুক্রবার সকালে গ্রীষ্মের দাবদাহকে উপেক্ষা করে রেশনের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন সাধারণ মানুষেরা। এই ঘটনায় আসানসোলের জামুড়িয়া এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, আসানসোল পুরনিগমের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে জামুড়িয়ার নিংঘা এলাকার মানুষেরা দীর্ঘ তিন মাস রেশন না পেয়ে, এদিন তারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত তিন মাস ধরে রেশন না পেলেও তাদের স্লিপ কেটে নেওয়া হচ্ছে। ৫ মাস আগেও তাদের সঙ্গে এই ঘটনা হয়েছিল। তা নিয়ে তখন তারা বিক্ষোভ করেছিলেন ।

এদিন নিংঘায় বিক্ষোভের সময় মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়। তারা এদিন রাস্তায় ছাতা মাথায়, সাইকেল, মোটরসাইকেল রেখে দিয়ে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। সকাল ৭টা থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছান খাদ্য পরিদর্শক ও স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। তাদের আশ্বাসে বিক্ষোভ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গত তিন মাস ধরে আমরা রেশন পাইনি। প্রতি মাসে এলাকার মানুষ রেশনের জন্য লাইনে দাঁড়ালেও তা পাই না । তাই এবার মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেকোনও মূল্যে তারা রেশন নেবে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে মানুষেরা রেশনের জন্য অপেক্ষা করার পরে যখন তারা জানতে পারে, যে তারা রেশন পাবে না তখন ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন। তাদের দাবি নিংঘা এলাকার মানুষদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে কারোর কোনও মাথাব্যথা নেই।

এদিন বিক্ষোভের কথা শুনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রতিনিধি ভোলা পাসোয়ান। তিনি বলেন, এই ওয়ার্ডে মানুষ রেশন না পেয়ে প্রতিনিয়তই নানান সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কেন এমন রেশনের জন্য বারবার মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন ?

এ প্রসঙ্গে সিপিএমের নোমান আশরাফ খান বলেন, রেশন দুর্নীতি পশ্চিমবঙ্গে নতুন কিছু নয়। যে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী কারাগারে আছেন, সেই দফতরের আধিকারিক ও কর্মী কিভাবে কাজ করবেন, তা সবাই জানে। আমর দল এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনও ফল হয়নি। মানুষ তাদের ন্যায্য রেশন পাওয়ার জন্য আকুল।

তাঁর দাবি, এখানে পুলিশ প্রশাসনের মধ্যস্থতায়, সমস্ত রেশন ডিলারদের সঙ্গে একটি মিটিং করতে হবে। রেশন ডিলারদের বলতে হবে যে তাদের সঠিক সময়ে রেশন দেওয়ার জন্য। নয় তো তাদের কড়া হাতে শাস্তি দিতে হবে ।এদিনের বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান খাদ্য পরিদর্শক তপন রক্ষিত । পরে তিনি বলেন, রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগামী দিনে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।তিনি আরও বলেন, এই মাসে ৪০ কুইন্টাল খাদ্য সামগ্রী রেশন ডিলারকে দেওয়ার কথা ছিল। যা এখনো বকেয়া রয়েছে। সেই রেশন মানুষকে দেওয়া হবে।

গত দুই মাসের বকেয়া পাওনা সম্পর্কে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, যে তিনি নিজেকে একজন রেশন ডিলার ভাববেন। সরকারিভাবে কোনও বকেয়া নেই। গত দুই মাসের খাদ্য সামগ্রী রেশন ডিলারকে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের রেশন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান না হলে, রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেই তিনিজানান ।

এদিকে, এই প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ডেপুটি কন্ট্রোলার অফ ফুডস্ অমিত গাঙ্গুলি এদিন সন্ধ্যায় বলেন, গ্রাহকদের অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে খতিয়ে দেখার পরে ওই ডিলারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

এদিন বিক্ষোভের খবর পেয়ে এলাকায় দপ্তরের একটা দল যায়। তারা সবকিছু শুনে এসেছেন। এবার রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *