অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, রানিগঞ্জ : গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঠিকমতো সাধারণ মানুষের পরিষেবা দিচ্ছেন না। এমনকি সকাল সাড়ে দশটায় যে পঞ্চায়েত দপ্তর খোলার কথা তা সাড়ে বারোটা, একটার আগে খোলে না।
এমনই সব অভিযোগকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখালেন আসানসোলের রানিগঞ্জ ব্লকের তিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ স্বরূপ বন্দোপাধ্যায় ও তৃনমুল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য সুশান্তি হাঁসদার নেতৃত্বে হওয়া পঞ্চায়েত দপ্তর ঘেরাও বিক্ষোভ প্রায় দু ঘন্টা ধরে চলে। তৃনমুল কংগ্রেসের প্রধানের বিরুদ্ধে তৃনমুলেই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও পঞ্চায়েত সদস্য সরব হওয়ায়, গোটা বিষয়টি রাজনৈতিক গুরুত্ব পেয়েছে।
এদিন বিক্ষোভকারীদের দাবি, পঞ্চায়েত প্রধান নিজের আধিপত্য দেখানোর জন্য পঞ্চায়েত দপ্তরে আসা গ্রামবাসীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তিনি ঠিক মতো কাজও করেন না। তা নিয়ে আমরা বিডিওর কাছে প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলাম ।

তাঁরা আরও বলেন, তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান আমাদের এলাকার কাজ করছেন না বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অভিযোগ করে বলেন, আমি ও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সহ বেশ কয়েকজন স্বাক্ষর করে একজনের একটা সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করি। তারপরেও তার দেখা পাইনি।
পঞ্চায়েত সদস্য সুশান্তি হাঁসদা বলেন, আমার এলাকার মানুষের কোনও কাজই প্রধান করতে চাইছেন না। এলাকার মানুষেরা এসে বারবার ঘুরে যাচ্ছেন। পঞ্চায়েত দপ্তর খোলা হয় মর্জি মাফিক। সাড়ে বারোটার সময় দপ্তর খোলা হয়। কোনও কোনও দিন দুপুর একটার আগে খোলে না। জরুরী ভিত্তিতে প্রধানের বাড়িতেই রেসিডেনশিয়াল সার্টিফিকেট নিতে গেলেও, তা পাওয়া যায় না। অনেক ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্যর।
যদিও, তার বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন পঞ্চায়েত প্রধান সন্তোষ চট্টোপাধ্যায়। তিনি দাবি করে বলেন, প্রতি ক্ষেত্রেই সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্যর সমর্থন নিয়ে, সরকারি আইন ও নিয়ম মেনে কাজ করা হয়। যে শ্মশান ঘাটের সার্টিফিকেটের কথা বলা হচ্ছে, তা একদিন পরে দেবো বলেছিলাম। তার আরও দাবি, গত কয়েকটা দিন নির্বাচনের কাজের জন্য সময়ে কিছু করা যায়নি। সেই কারণে কয়েকটি ক্ষেত্রে অসুবিধে সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদেরকে। তবে সেই সব কিছু কাটিয়ে উঠে আবার স্বাভাবিক ছন্দে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, কোনও সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করা হবে না, তাদের পরিসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে। প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত সদস্যদের নিয়ে গ্রহণ করা হয়। এটাই তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের নীতি ।তবে দলেরই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এইভাবে দলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও পঞ্চায়েত সদস্য সরব হওয়ায়, কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে রাজ্য শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব।
অন্যদিকে, এই তৃনমুল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছে বিরোধী দলগুলি। তাদের বক্তব্য, সাধারণ মানুষ এমন অভিযোগ করলে, বিরোধীদের অপপ্রচার বলে চালিয়ে দেওয়া হত ।



Be First to Comment