অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা: রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার তদন্ত করতে মঙ্গলবার কলকাতা থেকে এল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। তাদের সঙ্গে আসেন ফরেনসিক বিভাগের আধিকারিকরা। এই ঘটনায় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে স্থানীয় মহলে।
রবিবার রাতে ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে ঝাড়খণ্ডের গিরিডি পুলিশ সরিয়া এলাকার জঙ্গল থেকে ডাকাতি করা বেশ কিছু হিরে ও সোনার গহনা উদ্ধার করে। আসানসোল থেকে ডাকাত দলের ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া এক হন্ডা ক্রেটা গাড়িও পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে রানিগঞ্জ থেকে একটি বাইক ও আসানসোলের মহিশীলা কলোনি থেকে আরো একটি বাইক। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে ৪২ রাউন্ড তাজা কার্তুজও। এই ঘটনায় যুক্ত থাকা বিহারের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা সুরজ সিংকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় বিহারের সিওয়ানের বাসিন্দা কুখ্যাত সোনু সিংকে। জানা গেছে, এই দুই দুষ্কৃতী এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
ঝাড়খণ্ড পুলিশ সূত্রে জানা, সুরজ ও সোনু সিংয়ের একটা বড় ধরনের অপরাধ চক্র আছে। বড় মাপের চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের পাশাপাশি খুন করার মতো অভিযোগ রয়েছে এদের বিরুদ্ধে। এবার সেই কুখ্যাত ডাকাত দল সুপরিকল্পিতভাবে রানিগঞ্জে শহরের প্রাণ কেন্দ্রে দিনে দুপুরে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়ে কয়েক কোটি টাকার গয়না নিয়ে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ( শ্রীপুর পুলিশ ফাঁড়ির একজন আইসি মেঘনাথ মণ্ডল ) এক অফিসারের তৎপরতায় প্রাথমিক ভাবে ডাকাত দলকে আটকানোর চেষ্টা কিছুটা হলেও করা হয়।অবশ্য উচ্চপদস্থের নির্দেশ ছাড়াই মেঘনাথবাবু স্বেচ্ছায় দায়িত্ব পালন করে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের মান কিছুটা বাঁচিয়েছেন ।

তবে, এই ঘটনার পরে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বেশ কিছু গলদ ও ফাঁকফোকর বেরিয়ে পড়েছে। যেভাবে ডাকাতি করার পরে ডাকাত দল আসানসোল হয়ে একটি গাড়ি ছিনতাই করে বর্ডার বা সীমানা পার করে বাংলা থেকে ঝাড়খণ্ডে চলে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।তাহলে শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা কোথায় ? এই ধরণের দিনে দুপুরে ডাকাতি, অপরাধ মূলক ঘটনা ঘটার আগে পুলিশের গোয়েন্দা অফিসাররা কিছু জানতে পারলেন না কেন ? ছিনতাই করা গাড়িতে জিপিএস থাকা সত্বেও আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ সেটিকে ধরতে কেন ব্যর্থ হল ? একাধিক জায়গায় নাকা চেকিং থাকা সত্বেও আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ ডাকাত দলকে আটকাতে পারেনি কেন ? অথচ পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড পুলিশ অনায়াসেই গাড়ি সহ দুজনকে ধরে ফেলে।
স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, একাধিক আইপিএস ও ডব্লুবিপিএস অফিসার ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সহ আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট করে কী লাভ? যদি তারা অপরাধ আটকাতে ও অপরাধ হওয়ার পরে অপরাধীদের ধরতে না পারে?



Be First to Comment