Press "Enter" to skip to content

রানিগঞ্জে বেঙ্গল পেপার মিলে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিশ, বামেদের ধর্নায় বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল

মিলের গেটে বিজেপি বিধায়ক। ছবি:প্রতিবেদক

নিজস্ব সংবাদদাতা,রানিগঞ্জ: পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রানিগঞ্জের বেঙ্গল পেপার মিলের কর্মীদের ধর্না মঞ্চে সিটু নেতার পাশে বসেই বিক্ষোভ আন্দোলনে সামিল হলেন আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।

তবে আগে কেন, যখন এক মাস ধরে বিনা নোটিশে মিল বন্ধ ও একমাস বকেয়া আদায়ের দাবিতে আন্দোলনের সময়কালে ও পেপার মিলে “সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক ” র নোটিশ ঝোলানোর সময় এলাকার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে দেখতে পাওয়া যায়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সে সময় কর্মী ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা দাবি করেছিলেন এলাকার বিধায়ক একবারও এলেন না পেপার মিল বন্ধ হওয়ার পরে। তবে এ বার দু’মাস মিল বন্ধ হওয়ার পরেও পেপার মিলে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও, সেই বৈঠক হয়নি। পেপার মিলের কর্মীদের দাবি ও সমস্যা না মেটার কারণে, রবিবার বল্লভপুর পেপার মিল গেটে এসে পৌঁছান বিজেপি বিধায়ক।

বাম শ্রমিক সংগঠনের নেতার পাশে বসে অগ্নিমিত্রা দাবি করলেন, অবিলম্বে কর্মীদের সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে উৎপাদন চালু করতে হবে পেপার মিল কর্তৃপক্ষকে। এ দিন হঠাৎ করেই বিজেপি বিধায়কের আসার ঘটনা নিয়ে অবশ্য তির্যক মন্তব্য করতে ছাড়েনি বিরোধী দল। যে বাম শ্রমিক সংগঠনের নেতা হেমন্ত প্রভাকরের পাশে বসেই বিজেপি বিধায়ক প্রতিবাদ করেছেন, সেই বাম নেতার দাবি, রাজ্য সরকারের কোনো প্রতিনিধি এখনও পর্যন্ত এখানে আসেননি। কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনা করা দলের জনপ্রতিনিধি দু’মাস পর এসেছেন।

এ কথা বলে তিনি মজার ছলেই দাবি করেন, আপনাদের পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মনে আছে। সেই সময় ফোর্স আসছে, ফোর্স আসছে, বলা হচ্ছিল। মনে হচ্ছে এখন সেই একই ব্যাপার । তাঁর দাবি, “লড়াইটা আমরাই করেছিলাম কর্মীদেরকে নিয়ে। পেপার মিল কর্তৃপক্ষকে সিটুর পক্ষ থেকে চিঠি দিয়েছিলাম। সিটুর জেলা সভাপতি বংশগোপাল চৌধুরী সেই রাতে এসে পৌঁছেছিলেন। তবে কি কেন্দ্রীয় সরকার ঘুমিয়ে ছিল? কেন্দ্রীয় শ্রম দফতর তো কলকাতাতেই রয়েছে। তাহলে তারা নীরব কেন ছিল”।

বাম নেতা আরও দাবি করেন, রাজ্য সরকারকে যে ভাবে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত, তেমনি কেন্দ্র সরকারকেও দাঁড় করানো উচিত কাঠগড়ায়। তিনি দাবি করেন, “এইসব বিষয় নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। বিধায়ক এখানে এসেছেন কর্মীদের হিতাকাঙ্ক্ষী হয়ে। তাই আমরা তাঁকে ওয়েলকাম জানিয়েছি। কিন্তু আমরা যেটা দাবি করেছি, যে পেটে খিদে থাকলে রুটি রোজগারের কথা উঠে আসে। সেখানে আর অন্য কিছুই আসে না। রাজনীতি আসে না।”

অবশ্য রাজ্য বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, “এখানে কোনো দল দেখে আসিনি। এখানে একটা মিল বন্ধ হতে চলেছে। একজন কর্মী তাঁর পরিবারের চারজন সদস্যের রুজি রুটি জোগাড় করেন। তাই খাবারের জন্য সকলে হাহাকার করছেন। তাই সকলের পেটের দায়ে আমরা সবাই এক হয়েছি। এখানে কোনো দল বা রাজনীতি করতে আসিনি। শুধু মানুষ রয়েছে আর কর্মীরা রয়েছেন।”

রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে কোনো প্রতিনিধি আসেননি এখানে। তার মানে কি মালিকের সঙ্গে কোনো আঁতাত রয়েছে। তাঁদের না আসার আর এ ছাড়া কী কারণ আছে ? এই বলে তিনি দৃঢ়ভাবে জানান আমারা তো আঁতাতে নেই। আমি তো কর্মীদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছি। আমি তো চিঠি দেব কেন্দ্রীয় শ্রম দফতরে। তবে তারা কেন এসে দাঁড়াচ্ছেন না, তার মানে সেখানেও কি সিন্ডিকেট, কাটমানির খেলা চলছে বলে জানিয়ে সকলের সহমত চাইলেন এই ধর্না বিক্ষোভ থেকে। পরে তিনি দাবি করেন, “সব বুঝি, কী হচ্ছে। কিন্তু সেটা হতে দেব না।

যদিও এই বিষয়ে রাজ্যের শাসক দলে তৃণমূল কংগ্রেস ও তাদের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির নেতৃত্ব অবশ্য উল্টো দাবি করেছেন। তাঁরা বলেন, সবটায় রাজনীতির খেলা চলছে। তাঁরা কর্মীদের সঙ্গে আছেন। শীঘ্রই সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে বলেই দাবি করেন তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক নেতারা।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *