Press "Enter" to skip to content

স্নেহ ফল্গুধারায় সিঞ্চিত রাখি বন্ধনে মুছে গেল রাজনীতির ভেদাভেদ

দুর্গাপুর : ওঁরা ব্রাত্যজন। সামাজিক চেতনায় জারিত ওঁদের অন্তঃস্থল থেকে চুঁইয়ে পড়া স্নেহ ফল্গুধারার সন্ধান হয়তো অনেকেই পান না । তবে ব্যতিক্রমী কোনও কোনও ব্যক্তি যখন ওঁদের হৃদয় উৎসারিত বাৎসল্য প্রেমের স্বর্গীয় অনুভূতিতে জারিত হন, তখনই সেই ব্রাত্যজনেদের রুদ্ধ সঙ্গীত খুঁজে পায় সুর, লয়, ছন্দ।

আজ পবিত্র রাখি বন্ধনের পূণ্যলগ্নে সেই সুরেরই যেন অনুরণন শোনা গেল দুর্গাপুরের নিষিদ্ধপল্লীর ইট,কাঠ,পাথরের খঞ্জর থেকে। এ পল্লীর ভাঙা পথের রাঙা ধুলোয় যেন মিশে গেল ভালোবাসার পরশ মাখা এক অন্য পৃথিবী। কাদা রোড পল্লীর যৌনকর্মীরাও যে রক্তমাংসের মানুষ, তাঁদের হৃদয়ে ঘুমিয়ে থাকা ভগিনীরাও আজ রাখি বন্ধনের আলোয় আলোকিত হতে চেয়েছেন।

তাইতো ওঁদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এক মনোরম সকাল কাটানোর আকুতি নিয়ে পল্লীদ্বারে ছুটে এসেছেন দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেতা তরুণ রায়-সহ বেশ কয়েকজন। পরম প্রীতিভরে তরুণ রায়ের হাতে রাখি বেঁধে ভাই-বোনের সম্পর্ককে চির শাশ্বত করে রাখার সংকল্প নেন অনিন্দিতাদেবী। একই সঙ্গে এ পল্লীর সকল ভাইবোনের হাতে রাখি বেঁধে দেন শহরের সকলের রাজনীতির দিদি।

নিষিদ্ধপল্লীর বাসিন্দাদের পরমাদরে বুকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। পরস্পর মুখ মিষ্টির পর্বেও ঝরে পড়ল অকৃত্রিম সৌভ্রাতৃত্বের রঙিন বর্ণমালা। এই পবিত্র অনুষ্ঠানে অনিন্দিতাদেবীর হাত থেকে রাখি বাঁধার পর তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তরুণবাবু বলেন, “আমাদের রাজনীতির রং আর ভোটের বাক্সগুলো আলাদা, কিন্তু এটাই ভারতীয় সংস্কৃতি, ভাই আর বোনের সম্পর্কে কোন রাজনীতি থাকেনা। আমাদের চেতনা, আমাদের মূল্যবোধ চিরকাল এটাই শিখিয়েছে। অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছে পারিবারিক বন্ধন, দিদি প্রতি বছরই পরম স্নেহভরে রাখি বেঁধে আশীর্বাদ করেন। এবার কাদা রোডের বোনেদের হাত থেকে রাখি পরার সঙ্গে সঙ্গে দিদির হাত থেকেও রাখি পরলাম। এই অনুভূতি বর্ণনা করা যাবে না। হোক না সেই মিলনস্থল নিষিদ্ধপল্লীর ছোট্ট এই প্রান্তরভূমি”।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *