Press "Enter" to skip to content

স্থানীয়দের কাজ ও গ্রাম উন্নয়নের দাবি, জামুড়িয়ায় একটি বেসরকারি কারখানার গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ

স্থানীয়দের বিক্ষোভ। নিজস্ব ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামুড়িয়া: স্থানীয়দের কাজ ও গ্রামের উন্নয়নের দাবিতে মঙ্গলবার জামুরিয়ায় একটি বেসরকারি কারখানার চারটি গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখালেন ধসল গ্রামের বাসিন্দারা।

এই বিক্ষোভের জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে জামুড়িয়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।

এ দিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সমস্ত গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিক্ষোভ সাময়িকভাবে উঠিয়ে নেন গ্রামবাসীরা। কয়েক হাজার গ্রামবাসী এই বিক্ষোভে যোগ দেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কয়েক বছর আগে এই বেসরকারি কারখানা কর্তৃপক্ষ গ্রামের সমস্ত মানুষের সঙ্গে মিটিং করেছিলেন। কারখানার জন্য গ্রামের মানুষের কাছে গ্রামের যুবকদের চাকরির কথা বলে খুব অল্প দামে জমি কিনেছিলো। তখন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে এইখানে কারখানা হলে গ্রামের বেকার সমস্যা মিটবে ও গ্রামের উন্নয়নও হবে।

কিন্তু কারখানা তৈরী হওয়ার পরে গ্রামের মানুষের কথা ভুলে গেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

এই বিষয়ে গ্রাম উন্নয়ন কমিটির পক্ষে বিপুল কুন্ডু বলেন, বহুবার কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়েছিল। তখন কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে কারখানা চালু হওয়ার আগেই স্থানীয় বেকারদের কাজ দেওয়া হবে। গ্রামে নতুন পুকুর বানানো হবে। তার সঙ্গে, গাড়ি চলাচলের জন্য গ্রামের রাস্তা খারাপ হয়েছে সেটিও সংস্কার করা হবে। এর সঙ্গে গ্রামের দুস্থ গ্রামবাসীদের কুড়িটির মত বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে।

কিন্তু স্থানীয়রা লক্ষ্য করেন যে, কারখানা চালু হওয়ার পরে প্রায় পাঁচ হাজার বহিরাগতরা এই কারখানায় কাজ করছেন। অথচ একটাও স্থানীয় বেকার যুবককে কাজ দেওয়া হয়নি এই কারখানায়।

ধসল গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক বিদ্যুৎ বরন বাউরি বলেন, কয়েক বছর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ গ্রামের মানুষের কাছে জমি চাইতে এসেছিলেন। সেই সময় তারা গ্রামের বেকার যুবকদের কাজ ও গ্রামের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের এই প্রতিশ্রুতির পর প্রায় ৪০০ বিঘারও বেশি জমি কারখানা কর্তৃপক্ষকে কম টাকায় গ্রামের লোকেরা বিক্রি করে দেন।

এরপর বহুবার কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গ্রামের উন্নয়ন ও বেকার ছেলেদের জন্য তারা আবেদন করেছিলেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে কারখানা চালু হওয়ার পর গ্রামের বেকার যুবকদের কাজ ও গ্রামের উন্নয়ন করা হবে।

কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে কয়েক হাজার বহিরাগত বিশেষ করে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের মানুষ এসে এই কারখানাতে কাজ করছেন। অথচ জমিদাতাদের চাকরি দেওয়ার জন্যও কারখানা কর্তৃপক্ষ চুক্তি করেছিলেন। সেই চুক্তি অনুযায়ী জমিদাতাদের কাজ দেওয়া হয়নি।

গ্রামের উন্নয়নের কথা বললেই কারখানা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করছেন। তাই বাধ্য হয়ে গ্রামের উন্নয়নের স্বার্থে ও গ্রামের বেকার যুবকদের জন্য এদিন তারা গেটে বিক্ষোভে বসতে বাধ্য হয়েছেন।

বিদ্যুৎবাবু আরো জানান, যতক্ষণ না কারখানা কর্তৃপক্ষ তার প্রতিশ্রুতি মতো কাজ করছেন ততক্ষণ তারা গেটে বসে থাকবেন।

ওই কারখানার ডিরেক্টর মলয় কুমার চন্দ বলেন, গ্রামবাসীদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। যে সমস্ত দাবি গ্রামবাসীর পক্ষে করা হয়েছে সেটি তারা মেনে নিয়েছেন। খুব দ্রুত বেকার যুবকদের চাকরি ও গ্রামের উন্নয়ন করা হবে।

কারখানা কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসের পর গ্রামবাসীরা এদিনের বিক্ষোভ আন্দোলন তুলে নেন।

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *