বারাবনি : খোলামুখ কয়লাখনি বা ওসিপিতে বিস্ফোরণ বা ব্লাস্টিংয়ের প্রতিবাদে বেসরকারি সংস্থার অফিসে হামলা চালান বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা।
আরও অভিযোগ, অফিসে ব্যাপক ভাঙচুরও করা হয়। ভেঙে ফেলা হয় অফিসে থাকা কম্পিউটার সহ বিভিন্ন সামগ্রী। তছনছ করে দেওয়া হয় অফিসের কাগজপত্র। পরে সেইসব কিছু অফিসের বাইরে এনে আগুন ধরানো হয়। এছাড়াও ভাঙচুর করা হয়েছে অফিসের বাইরে থাকা সাতটির মতো বড় গাড়িও।
অফিসে থাকা দুই কর্মীও এই হামলায় আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অফিসের বাকি কর্মীরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে বারাবনি থানার পুলিশ এলাকায় আসে।
আসানসোলের বারাবনি থানার বারাবনি ব্লকের দোমোহানি গ্রাম পঞ্চায়েতের চরনপুর খোলা মুখ খনিতে বুধবার দুপুরে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

জানা গেছে, এদিন দুপুর আড়াইটা নাগাদ চরণপুর খোলামুখ কয়লাখনিতে ব্লাস্টিং করা হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই ব্লাস্টিং খুব জোরে হচ্ছিল বা উচ্চতা সম্পন্ন ছিল। তাতে আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বারবার এই কয়লাখনিতে ব্লাস্টিং নিয়ে এইসব গ্রামের মানুষদের অভিযোগ এবং আপত্তি ছিল।
অভিযোগ, ব্লাস্টিংয়ের কারণে গ্রামের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছিল। বারবার বলার পরেও ইসিএল কর্তৃপক্ষ ও কয়লা উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছিল না। তা নিয়ে এইসব গ্রামের মানুষদের মধ্যে একটা চাপা অসন্তোষ এবং ক্ষোভ ছিল।
এরপর এদিন একই ঘটনা ঘটায় স্থানীয় আশেপাশের গ্রামের শতাধিক মানুষজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা চরণপুরে এসে বেসরকারি সংস্থার অফিসে ঢুকে পড়েন। ব্যাপক ভাঙচুর চালানো শুরু করেন। প্রথমে অফিসের নিরাপত্তা রক্ষী ও কর্মীরা গ্রামবাসীদের আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু গ্রামের মানুষদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি থাকায়, তারা পিছু হটেন। এরপর অফিস চত্বরে থাকে বেশ কিছু বড় গাড়ি ও ছোট গাড়িকেও ভাঙচুর করা হয়। তারপরে কম্পিউটার এবং কাগজপত্র অফিসের বাইরে বার করে তার মধ্যে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। হামলা থামাতে গিয়ে অফিসের দুই কর্মী আহত হয়েছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে বারাবনি থানার পুলিশ এলাকায় ছুটে আসে। ইসিএলের সিআইএসএফও ঘটনার খবর পেয়ে পৌঁছায়। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে অফিসের কর্মীদের মধ্যে।
হামলা নিয়ে ইসিএল ও বেসরকারি সংস্থার তরফে এখনই কোনও কিছু বলা হয়নি। তাদের তরফে বলা হয়েছে, ঠিক কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে ও অফিসের কি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যাওয়া হয়। তখন সেখানে কেউ ছিল না। অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে পুলিশকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। ইসিএল বা বেসরকারি সংস্থার তরফে কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ দায়ের করা হলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




Be First to Comment