Press "Enter" to skip to content

বারান্দায় বসেই কাজ করেন প্রধান শিক্ষক, বর্ষার মরশুমে স্কুল মাঠে বসে ক্লাসের বিকল্পও শিকেয়, উদ্বেগ জলপাইগুড়ির এই স্কুলে

অনলাইন কোলফিল্ড টাইমস সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: করোনার কারণে শিক্ষায় যে ধাক্কা লেগেছিল, তা এখনও সারিয়ে ওঠা যায়নি। তারই মধ্যে কয়েক বছরের ব্যবধানে দুটি ঝড়ের কারণে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে স্কুলবাড়ির। এ বার আসছে বর্ষা। পঠনপাঠন নিয়ে দুশ্চিন্তা আরো গভীর হচ্ছে বোলতলা হরেকৃষ্ণ কোঙার কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

সামনে ছোট মাঠ। মাঠের ধার ঘেঁষে অর্জুন আর আকাশমণি গাছের সারি। অন্য দিকে, এক টানা লম্বা বারান্দা, ক্লাসঘর, অফিসরুম। এরই একাংশের টিনের চাল ঝড়ে উড়ে গিয়েছে কয়েক বছর আগে। রোদ,জল-বৃষ্টিতে পাকা ঘরের বেহাল দশা, কাঠের কাঠামো পচে যেতে বসেছে।

করোনাকালের পর থেকেই এই দশা বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক হরি নারায়ন সিং। তিনি বলেন, “২০১৯-২০ সালে দু-দুটো ঝড়ে স্কুলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। করোনার পরে সংস্কারের কথা ছিল। কিন্তু, কোন কাজই হয় নি। ডিপিএসসি থেকেও পরিদর্শন করে গিয়েছে।” ব্লক অফিস -সহ একাধিক দফতরে আবেদন-নিবেদন করার পরে আশ্বাস ছাড়া কিছুই জোটেনি বলে অভিযোগ কর্তৃপক্ষের।

শহর থেকে ১৫-১৬ কিলোমিটার দূরে বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই স্কুল। স্থানীয় পঞ্চায়েত ও স্কুলের প্রাক্তন ছাত্ররাও সাধ্যমতো ছোটাছুটি করেছেন বলে জানিয়েছেন সহকারি শিক্ষক প্রদীপ কুমার ঘোষ। সদর পশ্চিম মন্ডলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক নাতাশা পারভীন বলেন, “পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে উপরমহলে জানিয়েছি।” পরিস্কার আবহাওয়ায় স্কুলের বারান্দায় বসেই দৈনন্দিনের কাজ সারেন প্রধান শিক্ষক। এক পার্শ্ব শিক্ষক -সহ বাকি শিক্ষকেরা স্কুল মাঠে অর্জুন গাছের নীচেই পড়াতে বসেন।

এ দিকে, এই বেহাল স্কুলে বছর কয়েক আগে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে পঞ্চম শ্রেণী। ফলে কিছুটা হলেও পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়েছে। পাঁচটি ক্লাসরুমের মধ্যে তিনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ায় আতান্তরে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে দুটো ঘরেই ছয়টি শ্রেণীর পড়ুয়াদের নিয়ে পাঠদান করেন শিক্ষকেরা। বর্ষার মরশুমে স্কুলের মাঠে পাঠদানের বিকল্প ব্যবস্থা শিকেয় ওঠে। ফের বর্ষা আসছে। স্বভাবতই, উদ্বেগে তাঁরা।

প্রধান শিক্ষক বলেন, “স্কুলের উড়ে যাওয়া টিনের চালের একাংশ, কাঠ -সহ কিছু সামগ্রী একটা ক্লাসরুমে ডাঁই করা হয়েছে। এলাকায় সাপের উপদ্রবও রয়েছে। ওই সামগ্রী গুলো নিলাম করার আবেদন সংসদে করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় নি।” জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় বলেন, “সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দফতরে এই স্কুল -সহ মোট ৪৬টি স্কুলের নামের তালিকা পাঠান হয়েছে। দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”

More from জেলায় জেলায়More posts in জেলায় জেলায় »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *