আসানসোল : পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুড়িয়ায় জল প্রকল্পে গন্ডগোলের জেরে পুলিশের করা মামলায় প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি সোমবার আসানসোল জেলা আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন।
জিতেন্দ্র তেওয়ারির সঙ্গে আত্মসমর্পণ করেন গোপী পাত্র। দুপুরের পরে আদালতে সিজিএমের এজলাসে সওয়াল-জবাব শুরু হয়। জিতেন্দ্র তেওয়ারির হয়ে আইনজীবী ছিলেন শেখর কুন্ডু। তিনি এই মামলায় জিতেন্দ্র তেওয়ারির জামিনের আবেদন করেন। শেষ পর্যন্ত বিচারক ১ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জিতেন্দ্র তেওয়ারি জামিন মঞ্জুর করেন।
পাশাপাশি জামিন পেয়েছেন গোপী পাত্র। এই প্রসঙ্গে শেখর কুন্ডুর সহকারী আইনজীবী খুরশিদ আলম বলেন, দুজনেই জামিন পেয়েছেন। পরের শুনানি ১৪ দিন পরে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি জামুড়িয়ার দরবারডাঙ্গা জল প্রকল্পে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, অজয় নদীর এই জল প্রকল্প অবৈজ্ঞানিক ভাবে বালি তোলার জন্য নষ্ট হতে বসেছে। এই খবর পেয়ে সেখানে জিতেন্দ্র তেওয়ারি যান। তার সঙ্গে ছিলেন সেই এলাকার বিজেপি নেতা ও কর্মীরা। এই যাওয়া নিয়ে সেখানে বিরোধ দেখা দেয়। একটা গন্ডগোল হয়।
পরের দিন এই ঘটনার জন্য সেই জল প্রকল্পের এক নিরাপত্তা রক্ষীর অভিযোগের ভিত্তিতে জামুড়িয়া থানার পুলিশ জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং তার সহযোগী গোপী পাত্রর বিরুদ্ধে এফআইআর করে। এদিন সেই মামলায় আসানসোল আদালতে হাজির দেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
আদালতে সাংবাদিকদের জিতেন্দ্রবাবু বলেন, আমি যখন মেয়র ছিলাম, তখন জামুরিয়ার দরবারডাঙ্গা জল প্রকল্পের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলাম। তাতে জল প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। কিন্তু খবর পাই যে বালি মাফিয়ারা অজয় নদী থেকে বালি উত্তোলন করছে। এখন তারা জল প্রকল্পের খুব কাছে চলে এসেছে। যে কারণে ওই জল প্রকল্পটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জল প্রকল্পের যদি কোনও ক্ষতি হয়, তাহলে জামুরিয়া এবং আশেপাশের বিশাল এলাকার মানুষদেরকে জল সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, এবং সেই কারণেই তিনি ১৫ দিন আগে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু কি হল, সেখানে তৃণমূলের নেতাদের প্ররোচনায় আমি এবং আমার সঙ্গীদের উপর বালি মাফিয়ারা আক্রমণ করে। কিন্তু পরে দেখা যায় যে, আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি দেশের সংবিধান এবং আইনকে সম্মান করা একজন নাগরিক। তাই এদিন সেই মামলায় জামিন নিতে আদালতে এসেছি।
এই সঙ্গে জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, শাসক দলের নেতাদের অনুমতি ছাড়া পুলিশের পক্ষে এইভাবে কারো বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা সম্ভব নয়। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, বিজেপি এবং তাকে এভাবে থামানো যাবে না।
তাঁর স্পষ্ট জবাব, যখন মেয়র ছিলাম, তখন এই জল প্রকল্পের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলাম। এখন সেই জল প্রকল্পটি নষ্ট হতে দেখেও চুপ করে বসে থাকতে পারবো না। তাই এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবো। তার জন্য যদি আমাকে জেলে যেতে হয়, তাও যাবো। কিন্তু জল প্রকল্পটি রক্ষা করবোই।
এদিকে, এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, ওই জল প্রকল্পটি পুরনিগমের নয়। তাই সেখানে কি হয়েছিল, কে কাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাও আমার ও দলের জানা নেই। যে কেউ, কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারে।
Be First to Comment