আসানসোল : উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন সোমবার সকালে একেবারে “অন্য” ভূমিকায় দেখা গেল আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আসানসোল দক্ষিণ থানা ও কুলটি ট্রাফিক গার্ড পুলিশকে।
পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে আইনশৃঙ্খলা ও পথের নিরাপত্তা ঠিক রাখার পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ালেন পুলিশ অফিসাররা। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ নিজেদের ভ্যানে করে পৌঁছে দিল বার্নপুরের ৮ জন পরীক্ষার্থীকে।
আর অন্যদিকে, কুলটি ট্রাফিক গার্ড পুলিশ বাড়ি থেকে নিয়ে এল ১০ জন পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড। ১৮ জন পরীক্ষার্থীর জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা দিতে ত্রাতা”র ভূমিকায় যে দুজন পুলিশ অফিসার ছিলেন তারা হলেন আসানসোল দক্ষিণ থানার এসআই চিত্ততোষ মন্ডল ও কুলটি ট্রাফিক গার্ড ওসি এসআই চিন্ময় মন্ডল।

জানা গেছে, এই বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বার্নপুরের রহমত নগর হাই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছিল আসানসোলের এসবি গরাই রোডের সেন্ট মেরি গরেটি স্কুলে। কিন্তু রহমত নগরের ৭ জন পরীক্ষার্থী টোটো ভাড়া করে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ভুল করে চলে আসে এসবি গরাই রোড ও হটন রোড মোড় সংযোগস্থলের ইসমাইল মোড়ের আসানসোলের তুলসি রানি বালিকা শিক্ষা সদনে।
পরীক্ষার্থী নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। সেই ঘটনাটি নজরে আসে এই পরীক্ষা কেন্দ্রে কর্তব্যরত আসানসোল দক্ষিণ থানার এসআই চিত্ততোষ মন্ডলের। তিনি প্রথমে একটি টোটোতে বসিয়ে আটজনকে সঠিক পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পরীক্ষার্থীরা আর টোটোতে যেতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত তিনি সিভিক ভলেন্টিয়ার লক্ষ্মী সিংকে নিয়ে সাতজনকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পুলিশের গাড়ি করে পৌঁছে দেন সঠিক পরীক্ষা কেন্দ্রে।
এদিকে, সেন্ট ম্যারি গরোটি গালস্ হাইস্কুলে ভুল করে চলে গেছিলো হাজি কদম রসুল হাইস্কুলের এক পরীক্ষার্থী। এসআই চিত্ততোষ মন্ডল তাকে সঠিক পরীক্ষা কেন্দ্র আসানসোলের উমারানি গড়াই মহিলা কল্যান স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
এদিকে, কুলটি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন কুলটি গার্লস হাইস্কুলে একটি ঘটনা ঘটে। কুলটির এই স্কুলে কুলটি হিন্দি হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছিল। এখানে ১০ জন পরীক্ষার্থী এ্যাডমিট কার্ড বাড়িতে ভুলে পরীক্ষা দিতে পৌঁছেছিল। এই দশজনকে নিয়ম মতো পরীক্ষায় বসতে দিচ্ছিল না স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্বাভাবিক ভাবেই ওই পরীক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সেই সময়ে কুলটি ট্রাফিক গার্ড ওসি চিন্ময় মন্ডল মানবিক উদ্যোগ নিয়ে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেন। তিনি ১০ জনকে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে এ্যাডমিট কার্ড নিয়ে সময়মতো নিরাপদে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন ।

শহরের দুই জায়গায় পুলিশের এই তৎপরতা ও ভূমিকার কারণে পরীক্ষার্থীদের অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যরা স্বস্তি বোধ ও তাদের প্রশংসা করেছে। অভিভাবকরা বলেন, পুলিশের এই চেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়। তাদের জন্যই আমাদের মেয়েরা এদিন সময়মতো পরীক্ষা দিতে পেরেছে।




Be First to Comment